সাধারণ জ্ঞান বরেন্য ব্যক্তিত্ব রাজনীতিবিদ/সমাজ সংস্কারক
শেখ মুজিবুর রহমান (১৯২০-১৯৭৫)
বাঙালির সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সারে ১৭ মার্চ ফরিদপুর জেরার (বর্তমান গোপালগঞ্জ) টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
বিশেষ পরিচয়: জাতির জনক ও স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি হিসেবে।
রাজনৈতিক জীবন: ছাত্রজীবন থেকেই তিনি মুসলিম লীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ‘আওয়ামী মুসলিম লীগ’ গঠিত হলে তিনি এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন এবং পরে ১৯৫৩ সালে সাধারণ সম্পাদক হন।
১৯৫৪ সালে প্রথমে পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক পরিষদ এবং ১৯৫৫ সালে দ্বিতীয় গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং একই বছরে ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জন্য স্বায়ত্তশাসনের প্রশ্নে ৬ দফা দাবি উন্থাপন করেন ১৯৭০ সালের নির্বাচনে নিরুঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পান। ইয়াহিয়ার কাছ থেকে ক্ষমতা না পেয়ে তিনি দেশব্যাপী অসহযোগ আন্দেলনের ডাক দেন।
অর্জন: বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা ও স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি। ৭ মার্চ (১৯৭১) ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে অনুষ্ঠিত এক বিশাল জনসভায় প্রদত্ত ভাষণে তিনি বলেন, ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বধীনতার সংগ্রাম’। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি শাষকগোষ্ঠী তাকে বন্দি করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যায়। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
মৃত্যু: ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে কাতিপয় সেনার অভ্যুন্থানে তিনি সপরিবারে নিহত হন।
জিয়াউর রহমান (১৯৩৬-১৯৮১)
জন্ম: জিয়াউর রহমান ১৯ জানুয়ারি ১৯৩৬ সালে বগুড়া জেলার বাগবাড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ডাক নাম ছিল কমল।
বিশেষ পরিচয়: মহান স্বাধীনতা ঘোষক (বিতর্কিত) এবং বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা হিসেবে।
সামরিক জীবন: তিনি ১৯৫৩ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদেন।
১৯৭০ সালে তাকে চট্টগ্রামের ইস্ট-বেঙ্গল রেজিমেন্টের অষ্টম ব্রাটালিয়নের সেকেন্ড-ইন কমান্ডের পদে পদোন্নতি ও বদলি করা হয়।১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ রাতে পাকবাহিনী নির্বিচারে বাঙালি হত্যা শুরু করলে তিনি চট্টগ্রামে তার অধীনস্থ বাঙালি সেনাসদস্যদের নিয়ে পাকিস্তান সেনাবিহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন এবং চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে বাংলাদেশেল স্বাদীনতা ঘোষণা করেন। মুক্তিযুদ্ধের ১১টি সেক্টরের মধ্যে তিনি ১নং সেক্টরের কমান্ডর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭৬ সালের ২৯ নভেম্বর তিনি প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিযুক্ত হন। ১৯৭৭ সালের গণভোটের মাধ্যমে তিনি দেশের ৮ম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ১৯৭৮ সালে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে সর্বপ্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন এবং এক্ সিারৈর ১ সেপ্টেম্বর তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল’ বিএনপি গঠন করেন।
মৃত্যু: ১৯৮১ সালের ৩০ মে জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সেনাবাহিনীর কতিপয় বিপথগামী সদস্যের হাতে নিহত হন।
শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক (১৮৭৩-১৯৬২)
জন্ম: শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ১৮৭৩ সালের ২৬ অক্টোবর বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্চের সাটুরিয়া গ্রামে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন।
কর্ম জীবন: পেশাগতভাবে একজন আইনজীবী ছিলেন। ১৯১৫ সালে কৃষক প্রজা আন্দেলনের সূচনা করেন। বাংলার কৃষককে ঋণমুক্ত করার জন্য ১৯৫০ সালে প্রজাস্বত্ব আইন পাস করেন। তার উদ্যোগে ঢাকায় বেঙ্গল এগ্রিকালচার ইনস্টিটিউশন, চাখার কলেজ, ইডেন গার্লস কলেজ ও ছাত্রী নিবাস প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি ১৯৩৭ সালের অবিভক্ত বাংলার প্রথম মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন এবং দেশ বিভাগের পর ১৯৫৫ সালে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হন। তিনি ১৯৫৬ সালে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর নিযুক্ত হন।
বিশেষ পরিচয়: শেরে বাংলা হিসেবে।
মৃত্যু: ২৭ এপ্রিল ১৯৬২ সালে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
সুভাষ চন্দ্র বসু (১৮৯৭-১৯৪৪)
জন্ম: সুভাষ চন্দ্র বসু ১৮৯৭ সালের ২৩ জানুয়ারি উড়িষ্যার কটকে জন্মগ্রহণ করেন্
বিশেষ পরিচয়: নেতাজি নামেই তিনি অধিক পরিচিত।
কর্ম জীবন: ১৯২৪ সালে তিনি কলকাতা করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিযুক্ত হন। ১৯২৯ সালে বাংলা প্রাদেশিক কংগ্রেস সম্মেলনের সভাপতি এবং পরের বছর কলকাতা করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন ১৯৩৮ ও ১৯৩৯ সালে নেতাজি পরপর দুবার কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হন।
মৃত্যু: ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট তিনি সাইগল থেকে মাঞ্চুলিয়া যাওয়ার পথে বিমান দুর্ঘটায় মারা যান।
মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী (১৮৮০-১৯৭৬)
জন্ম: আবদুল হামিদ খান ভাসানী’ ১৮৮০ সালে সিরাজগঞ্জ জেলার ধানগড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
বিশেষ পরিচয়: ‘মজলুম জননেতা’ হিসেবে।
কর্ম জীবন: টাঙ্গাইল জেলার কাগমারীতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন।
১৯১৯ সালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের আদর্শে অনূপ্রাণিত হয়ে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দেন। তিনি ১৯২৪ সারে আসামের ধুবড়ি জেলার ভাসান চর এলাকায় বাঙ্গালি কৃষকদের নিয়ে বিশাল সমাবেশ করলে, উপস্থিত জনতা তাকে ‘মওলানা ভাসানী’ উপাধি দেয়। ১৯৪৯ সালে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন।
স্বধীনতা সংগ্রামে তার ভূমিকা অনস্বীকার্য।
মৃত্যু: ১৭ নভেম্বর ১৯৭৬ সালে।
রাজা রামমোহন রায় (১৭৭২-১৮৩৩)
জন্ম: রাজা রামমোহন রায় ১৭৭২ সালের ২২ মে হুগলি জেলার রাধানগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
কর্ম জীবন: ধর্মীয় কুসংস্কার ও সনাতনী প্রথার বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। হিন্দু ব্রাক্ষ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও হিন্দু ধর্মীয় প্রথা এবং সামাজিক ব্যবস্থায় সংস্কার আনাই ছিল তার মূল লক্ষ্য। ১৮০৩ সারে একেশ্বরবাদ নিয়ে আরবি ও ফারসি ভাষায় লেখা রামমোহনের প্রথম বই ‘তুফাত-উল-মোয়াহিদ্দীন’ প্রকাশিত হয়। ১৮১৫ সালের রামমোহন কলকাতায় চলে আসেন। শুরু হয় তার কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই। প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের সহযোগিতায় তিনি ১৮২৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ব্রাক্ষ্ সমাজ। তার চাপের মুখেই ব্রিটিশ করকার আইন করে ১৮২৯ সালে সতীদাহ প্রথা বাতিল করে দেন।
বিশেষ পরিচয়: সমাজ সংস্কারক, মুঘল সম্রাট কর্তৃক ‘রাজা’ উপাধি পান।
মৃত্যু: ২৭ সেপ্টেম্বর ১৮৩৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
শহীদ তিতুমীর (১৭৮২-১৮৩১)
জন্ম: মীর নিসার আলী ওরফে তিতুমীর ১৭৮২ সালে পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগণা জেলার বারাসাতের চাঁদপুর গ্রামে এক কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
বিশেষ পরিচয়: ইংরেজদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে শহীদ প্রথম বাঙালি।
কর্ম জীবন: বারাসাতের ইংরেজদের বিরুদ্ধে তিনিই প্রথম বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। এ বিদ্রোহ বারাসাত বিদ্রোহ নামে পরিচিত। ১৮৩১ সালের ২৩ অক্টোবর তিনি নারিকেলবাড়িয়ায় বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেন এবং ইংরেজদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেন। এ বিদ্রোহ দমনে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্নেল স্টুয়ার্টের নেতৃত্বে নারিকেরবাড়িয়ায় পদাতিক ও অশ্বারোহী সৈন্যের এক বিরাট বাহিনী প্রেরণ করে। ১৮৩১ সালের ১৯ নভেম্বর যুদ্ধে ইংরেজদের কামানের গোরায় বিধ্বস্ত হয় তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা। যুদ্ধে তিতুমীর ও তার প্রধান সেনাপতি গোলাম মাসুমসহ ৪০ জন মুজাহিদ শাহাদাৎ বরণ করেন।
মৃত্যু: ১৯ নভেম্বর ১৮৩১ সালে।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী (১৮৯২-১৯৬৩)
জন্ম: হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ১৮৯২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন।
বিশেষ পরিচয়: গণতন্ত্রের মানসপুত্র হিসেবে।
রাজনৈতিক জীবন: ১৯২০ সালে দেশে ফিরে তিনি কলকাতায় আইন ব্যাবসা শুরু করেন।
১৯২৩ সালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের সহযোগিতায় বেঙ্গল প্যাক্ট’ নামে হিন্দু-মুসলিম চুক্তি সম্পাদনের পক্ষে কাজ করেন। এ সময় তিনি কলকাতা করপোরেশনের ডেপুটি মেয়র নির্বাচিত হন। তিনিই কলকাতা করপোশেনের ডেপুটি মেয়র নির্বাচিত হন। তিনিই কলকাতা করপোরেশনের প্রথম মুসলমান ডেপুটি মেয়র। তিনি ১৯৩৬ সালে মুসলিম লীগে যোগ দেন। তিনি ১৯৪৩ সালে খাজা নাজিমুদ্দিনের মন্ত্রিসভায় খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪৬ সালে কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক ব্যবস্থাপক পরিষদসমূহের সাধারণ নির্বাচনের পর তিনি মুসলিম লীগ সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচিত হন ও ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট গঠন করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন।
মুত্যু: ৫ ডিসেম্বর ১৯৬৩ সালে লেবানলের বৈরুতে মৃত্যুবরণ করেন।
নবাব সলিমুল্লাহ (১৮৬৬-১৯১৫)
জন্ম: নবার সলিমুল্লাহ ১৮৬৬ সালে ঢাকায় আহসান মঞ্জিলে জন্মগ্রহণ করেন।
উপাধি: ‘স্যার’ খেতাব পান। মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা।
শিক্ষা: তিনি বিদেশি শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে গৃহশিক্ষা লাভ করেন।
জীবন: ১৮৯৩-১৮১৫ সাল পর্যন্ত তিনি ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯০১ সালে তার পিতা নবাব আহসান উল্লাহর মৃত্যু হলে তিনি পরিবারের প্রধান (নবাব)নিযুক্ত হন। নবাব পরিবারের মধ্যে তিনিই প্রথম সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ১৯০৬ সালে মুসলিম লীগ গঠনে নেতৃত্ব দান করেন। তিনি মুসলমানেদর অবস্থার উন্নতির লক্ষে বঙ্গভঙ্গের দাবি পেশ করেন। তার একক প্রচেষ্টায় তদানীন্তন বড় লাট লর্ড কার্জন ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ মেনে নেন।
মৃত্যু: ১৬ জানুয়ারি ১৯১৫ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
চিত্তরঞ্জন সাহা (১৯২৭-২০০৭)
জন্ম: শ্রী চিত্তরঞ্জন সাহা ১৯২৭ সালে ১ জানুয়ারি নোয়াখালী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।
বিশেষ পরিচয়: বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে একুশে বই মেলার প্রথম উদ্যোক্তা।
কর্মজীবন: ১৯৫১ সালে চৌমুহনীতে ‘পুঁথিঘর’ নামে ব্যাক্তিমালিকাধীন একটি পুস্তক প্রকাশনা ও বিক্রয় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে সৃজনশীল সাহিত্যকে উৎসাহিত করার জন্য তিনি গড়ে তোলেন ‘মুক্তধারা’ নামক প্রকাশনা সংস্থাটি।
পুরস্কার: ২০০৫ সালে শিক্ষা ক্ষেত্রে অবদান রাখায় একুশে পদক লাভ করেন।
মৃত্যু: ২৬ ডিসেম্বর ২০০৭, ঢাকায়।
আবদুল আলীম (১৯৩১-১৯৭৪)
জন্ম: সুবিখ্যাত লোকগীতি গায়ক আবদুল আলীম ১৯৩১ সালের ২৭ জুলাই মুর্শিদাবাদের তালিবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
বিশেষ পরিচয়: পল্লীগীতির মরমী কন্ঠশিল্পী হিসেবে।
কর্ম: ১৯৪৮ সালে তিনি ঢাকায় আসেন এবং ঢাকা বেতার থেকে নিয়মিত পল্লীগীতি পরিবশন করেন। তিনি ঢাকার প্রথম চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’সহ প্রায় পঞ্চাশটি চলচ্চিত্রের গানের কন্ঠশিল্পী ছিলেন। তিনি ঢাকার সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ের লোকগীতি বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন।
পুরস্কার লাভ; ১৯৭৭ সালে (মরনোত্তর)’একুশে পদক’ লাভ করেন।
মৃত্যু; ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া (১৯১১-১৯৬৯)
জন্ম: তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া ১৯১১ সালে পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন।
বিশেষ পরিচয়: বিশিষ্ট সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ এবং দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে।
শিক্ষা; তিনি পিরোজপুর উচ্চ বিদ্যালয় হতে এন্ট্রাস পাস করেন এবং ১৯৩৫ সালে বরিশাল বজ্রমোহন কলেজ হতে বিএ পাস করেন।
কর্ম জীবন: তিনি বরিশাল জেলা গণযোগাযোগ বিভাগের কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৪৭ সালে সোহরাওয়ার্দী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার পরিচালনা পর্যদর সচিব হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৪৮ সালে ঢাকা হতে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ইত্তেফাক পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৫৩ সালে তার সম্পাদনায় সাপ্তাহিক ইত্তেফাক দৈনিক পত্রিকা হিসাবে প্রকাশিত হয়।
মৃত্যু: ১ জুলাই ১৯৬৯ সালে পাকিস্তানে।
আবুল মনসুর আহমেদ (১৮৯৮-১৯৭৯)
জন্ম: আবুল মনসুর আহমেদ ময়মনসিংহ জেলার ধানিখোলা গ্রামে ১৮৯৮ সালে জন্মগ্রহণ করে।
বিশেষ পরিচয়: বিশিষ্ট, আইনজীবী, সাংবাদিক, সাহিত্যক এবং রাজনীতিবিদ হিসেবে।
কর্ম জীবন: ১৯২৯-১৯৩৮ সাল পর্যন্ত ময়মনসিংহে আইনজিবী হিসেবে যোগদান করেন। এর পর তিনি কলকাতায় সাংবাদিকতা করেন এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এর মাধ্যমে কংগ্রেসে যোগদান করেন। তিনি পূর্ব পাকিস্তানের যুক্তফ্রন্টের শিক্ষামন্ত্রী এবং ১৯৫৬ সালে শিল্প ও বানিজ্য মন্ত্রী ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। আবুল মনসুর আহমেদ ছিলেন একজন রম্য লেখক।
উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ: আয়না (১৯৩৬-১৯৩৭), ফুড কনফারেন্স (১৯৪৪), আবে হায়াত (১৯৬৪), গালিভারের সফরনামা ও আসমানী ইত্যাদি।
এছাড়া তার স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ ‘আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর (১৯৬৯) ও ‘আত্মকথা’ ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।
পুরস্কার; ১৯৬০ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ১৯৭৯ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ এবং নাসিরউদ্দিন পুরস্কার লাভ।
মৃত্যু: তিনি ১৯৭৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস (১৯৪০-)
জন্ম: ড. মুহাম্মদ ইউনুস ২৮ জুন ১৯৪০ সালে চট্টগ্রামে বক্সিরহাটে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম দুলা মিয়া এবং মাতার নাম সুফিয়া খাতুন।
বিশেষ পরিচয়: গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও নোবেল বিজয়ী একমাত্র বাংলাদেশী।
শিক্ষা: তিনি চট্টগ্রামে নামারবাজার অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা লাভ করেন। ১৯৫৫ সালে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল হতে ম্যাটিকুলেশন পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতক ও মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন।
কর্মজীবন: চট্টগ্রাম কলেজে শিক্ষকতার মাধ্যমে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৭২ সালে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৭৬ সালে চট্টগ্রামে জোবরা গ্রামে সর্বপ্রথম গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু করেন। এরপর ৩ অক্টোবর ১৯৮৩ সালে প্রামীণ ব্যাংক অধ্যদেশ জারি হলে গ্রামীণ ব্যাংকের কর্যক্রম শুরু করেন।
পুরস্কার: জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিলে ৬০ টিরও অধিক পুরস্কার পান।
উল্লেখযোগ্য পুরস্কারের মধ্যে ২০০৬ সালে নোবের শান্তি পুরস্কার ও সিডনি পুরস্কার অন্যতম।
বঙ্গবীর এম.এ.জি ওসমানী (১৯১৮-১৯৮৪)
১৯১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তিনি সশস্ত্র ও মুক্তিবাহিনীর প্রধান হিসাবে কাজ করেন। ১৯৮৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি তিনি পরলোক গমন করেন।
No comments