86. নদীর এপার কহে ছাড়িয়ে নিঃশ্বাস ওপারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস।

সুখ-দুঃখ, বেদনা নিয়েই মানুষের জীবন। কেউই চিরন্তন সুখী বা দুঃখী নয়। সে সব সময় নিজের চেয়ে অন্যকে সুখী ভাবে। কারণ মানুষ তার অসীম চাহিদার সমন্বয় করতে পারে না। ক্ষুদ্র জীবন পরিসরে মানুষ যখন যেটি চায় সেটিই তার একমাত্র আরাধ্য বস্তু নয়। একটি জিনিসের অভাব মেটানোর পর অন্য জিনিসের প্রতি তার আকাক্সক্ষা জন্মে। এই অাকাঙ্ক্ষা অনেক সময় পূর্ণ হয় না। অনুরূপ নদীর এক তীর ভাবে অপর
তীরে সুখ-শান্তি, সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ। অপর তীরের ধারণা একই। তাই উভয়কেই অতৃপ্ত এবং অসন্তুষ্ট দেখা যায়। নদীর এক কূল ভাবে যাবতীয় শোভা- সৌন্দর্যের প্রাণকেন্দ্র ওপারে। অন্য কূল তার নিজের সুখের কথা ভুলে একই রকম অতৃপ্তির যন্ত্রণায় কাতর হয়। ফলে এমন চিন্তা সুখ শান্তির ব্যাঘাত ঘটায়। মানুষের ক্ষেত্রেও বিষয়টি ঠিক তেমনি। সে নিজের চেয়ে অন্যকে বেশি সুখী মনে করে। মানুষ আসলে নিজে কী চায়, কী তার কাম্যবস্তু তা নিজেই সে জানে না। সে যা চায়-তা পাওয়ার পর তার প্রতি তার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে এবং আরও নতুন কিছু চায়। অপরের প্রাপ্তি দেখে হিংসাবোধ করে। পরকে সুখী মনে করে পরশ্রীকাতর হয়ে পড়ে। আর তখনই মানুষ অন্যের অকল্যাণ প্রত্যাশা করে। তার কাছে অন্যের সুখই বড় হয়ে উঠে। নিজের সুখে তৃপ্তি হয় না। ধরণের লোকেরা সর্বদাই না পাওয়ার অতৃপ্তিতে ভোগে। নিজের প্রাপ্তির মধ্যে সুখ না খুজে অপরের প্রাপ্তি দেখে হা-হুতাশ করে। ফলে কোনো কিছুই তাদের কাছে তৃপ্তিদায়ক হয় না
শিক্ষা: মানুষের ক্ষুদ্র জীবনের আশা আকাক্সক্ষার শেষ নেই। জীবনে সকল চাহিদা মিটিয়ে সুখের সন্ধান করা বোকামি। তাই অন্যের প্রতি ঈর্ষান্বিত না হয়ে নিজের যা আছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকার মধ্যেই সর্বোচ্চ সুখ লাভ করা সম্ভব। মূলত মনের সুখই প্রকৃত সুখ

No comments

Powered by Blogger.