৩. সর্বনাম পদ কাকে বলে? উহা কত প্রকার ও কি কি?
৩. সর্বনাম পদ
বিশেষ্য বা নাম পদের পরিবর্তে যে পদ ব্যবহৃত হয়, তাকেই সর্বনাম পদ বলে।
অনুচ্ছেদে বা প্যারাগ্রাফে একই বিশেষ্য পদ বারবার আসতে পারে। সেক্ষেত্রে একই পদ বারবার ব্যবহার করলে তা শুনতে খারাপ লাগাটাই স্বাভাবিক। এই পুনরাবৃত্তি রোধ করার জন্য বিশেষ্য পদের পরিবর্তে অনুচ্ছেদে যে বিকল্প শব্দ ব্যবহার করে সেই বিশেষ্য পদকেই বোঝানো হয়, তাকে সর্বনাম পদ বলে।
[সর্বনাম পদগুলো সব বিশেষ্য বা নামের পরিবর্তে বসতে পারে বলে এদেরকে ‘সর্বনাম’ বলে।]
‘বাংলাদেশ অত্যন্ত সুন্দর একটি দেশ। এই দেশটি যেমন সুন্দর, এই দেশের মানুষগুলোও তেমনি ভালো। তারা এতোটাই ভদ্র ও মার্জিত যে, তাদের কাছে ভিখারি ভিক্ষা চাইতে আসলে তারা তাদের বিতাড়িত করে না। বরং মার্জিতভাবে বলে, মাফ করেন।’
উপরের অনুচ্ছেদে মূলত ৩টি বিশেষ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে- ‘বাংলাদেশ’, ‘বাংলাদেশের মানুষ’ ও ‘ভিখারি’। এবং প্রথমবার উল্লেখের পর দ্বিতীয়বার কোন বিশেষ্যই আর উল্লেখ করা হয়নি। পরের বার থেকে
‘বাংলাদেশ’-র বদলে ‘এই দেশ’; ‘বাংলাদেশের (এই দেশের) মানুষ’-র বদলে ‘তারা’ ও ‘তাদের’ এবং ‘ভিখারি’-র বদলে ‘তাদের’ শব্দগুলো ব্যবহৃত হয়েছে। বিশেষ্য পদের বদলে ব্যবহৃত এই শব্দগুলোই হলো সর্বনাম পদ।
প্রকারভেদ
সর্বনাম পদগুলোকে মূলত ১০ ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-
১. ব্যক্তিবাচক বা পুরুষবাচক : আমি, আমরা, তুমি, তোমরা, সে, তারা, তাহারা, তিনি, তাঁরা, এ, এরা, ও, ওরা
২. আত্মবাচক
: স্বয়ং, নিজ, খোদ, আপনি
৩. সামীপ্যবাচক : এ, এই, এরা, ইহারা, ইনি
৪. দূরত্ববাচক
: ঐ, ঐসব, সব
৫. সাকল্যবাচক :
সব, সকল, সমুদয়, তাবৎ
৬. প্রশ্নবাচক
: কে, কি, কী, কোন, কাহার, কার, কিসে
৭. অনির্দিষ্টতাজ্ঞাপক : কোন, কেহ, কেউ, কিছু
৮. ব্যতিহারিক
: আপনা আপনি, নিজে নিজে, আপসে, পরস্পর
৯. সংযোগজ্ঞাপক
: যে, যিনি, যাঁরা, যাহারা
১০. অন্যাদিবাচক
: অন্য, অপর, পর
সাপেক্ষ সর্বনাম : কখনও কখনও পর্সপর সম্পর্কযুক্ত একাধিক সর্বনাম পদ একই সঙ্গে ব্যবহৃত হয়ে দুটি বাক্যের সংযোগ সাধন করে থাকে। এদেরকে বলা হয় সাপেক্ষ সর্বনাম। যেমন-
·
যত চাও তত লও (সোনার তরী)
·
যত চেষ্টা করবে ততই সাফল্যের সম্ভাবনা।
·
যত বড় মুখ নয় তত বড় কথা।
·
যত গর্জে তত বর্ষে না।
·
যেই কথা সেই কাজ।
·
যেমন কর্ম তেমন ফল।
·
যেমন বুনো ওল তেমনি বাঘা তেঁতুল।
No comments