181. সঙ্গদোষে লোহা ভাসে।

মানুষ সামাজিক জীব। একা বাস করতে পারে না বলে মানুষ সমাজবদ্ধ হয়ে বাস করে। বিপদে-আপদে, সুখে-দুঃখে একে অপরকে সঙ্গ দেয়। এভাবে একে-অপরের বন্ধুত্ব লাভ করে। একজনের জীবনের ওপর তার সঙ্গীর প্রভাব অনিবার্যভাবে পড়ে। বন্ধু যদি সৎ কর্ম করে তাহলে অপরজন তা অনায়াসে শিখতে পারবে। এক বন্ধুর সৎ কাজের দ্বারা অনুপ্রাণিত উৎসাহিত হয় অপর বন্ধু। কারণ প্রত্যেক মানুষের মধ্যে
অনুকরণ-বাসনা বিদ্যমান। একজন মানুষ ভালো হবে না খারাপ হবে অনেকাংশে তা নির্ভর করে তার পরিবেশের ওপর। আর পরিবেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো মানুষ যাদের সান্নিধ্যে সে থাকে। একজন ভালো মানুষের সান্নিধ্যে একজন খারাপ মানুষও ভালো মানুষে পরিণত হয়। আবার একজন মানুষ যত ভালোই হোক না কেন সে যদি মন্দলোকের সংস্পর্শে থাকে, তাহলে তার প্রভাবে মন্দ কাজ করতে বাধ্য হবে। যেমন, লোহা সাধারণত পানিতে ফেললে তা নিমেষেই ডুবে যাবে। কিন্তু তার সাথে যদি পানিতে ডোবে না এমন কোনো বস্তু বেঁধে দেওয়া হয়, তাহলে লোহা পানিতে ভেসে থাকে। অর্থাৎ বলা যায়, আগুনে হাত দিয়ে তা না পোড়ার কথা যেমন চিন্তা করা যায় না, তেমনই অসৎ সঙ্গীর সান্নিধ্যে থেকে ভালো কাজ করার কথা কল্পনাও করা যায় না। সবসময় মনে রাখতে হবে যে, দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো। বন্ধু থাকা ভালো। তবে যেখানে সৎ বন্ধু দুর্লভ, সেখানে অসৎ বন্ধুর সঙ্গ লাভের চেয়ে বন্ধুহীন নিঃসঙ্গ থাকাই ভালো। কারণ কুসঙ্গে মানুষ নিজের অজান্তেই ধীরে ধীরে খারাপ পথে অগ্রসর হয়। যেমন কেউ যদি মাদকসেবীর বন্ধুত্ব গ্রহণ করে, একদিন না একদিন কৌতহলী হয়ে মাদক নেয়ার ইচ্ছা হতে পারে। আবার ধীরে ধীরে নেয়ার পর তা নেশায় পরিণত হয়ে যেতে পারে। তাই অসৎ, চরিত্রহীন মানুষের স্পর্শ থেকে দূরে থাকা উচিত
শিক্ষা: মানুষ সঙ্গী ছাড়া থাকতে পারে না, তাই প্রত্যেকের উচিত সৎ, ন্যায়পরায়ণ সঙ্গী খুঁজে নেওয়া। জীবনকে সৎ, সুন্দর, মহৎ করতে সৎ সঙ্গী নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মন্দ সঙ্গী যেমন মন্দের দিকে টানে, তেমনই সৎ সঙ্গী সৎ সুন্দরের দিকে টানে

No comments

Powered by Blogger.