170. শৈবাল দীঘিরে বলে উচ্চ করি শির লিখে রেখো এক ফোঁটা দিলেম শিশির।

মহৎ মানুষ হিংসা, দীনতা, হীনতা স্বার্থপরতা থেকে নিজেকে দূরে রাখেন। উদার, মানব প্রেমিক এসব মানুষ সর্বদা সকল মানুষের মঙ্গল চিন্তা করেন। তাদের জ্ঞান-প্রজ্ঞা কর্ম দিয়ে দেশ জাতির কল্যাণসাধন করেন। তারা কখনো আপন গৌরবের কথা, উপকারের কথা অন্যের কাছে গর্ব করে প্রচার করেন না।
সমাজের মানুষকে তারা বটবৃক্ষ হয়ে আগলে রাখেন। তারা নিঃস্বার্থভাবে অপরের জন্য কাজ করে যান। বিপরীতে আমাদের সমাজে কিছু হীন, স্বার্থপর মানুষ আছে যারা সর্বক্ষণ নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকে। অন্যের উপকারের কথা স্বীকার করতে চায় না। বরং কখনো যদি উপকারীর সামান্যতম উপকার করতে পারে, তবে তা অতিরঞ্জিত করে প্রচার করে। তারা কখনোই বুঝতে চেষ্টা করে না যে তারা কতটা ক্ষুদ্রমনা। এই অকৃতজ্ঞতাবোধের পরিচয় পাওয়া যায় শৈবালের জীবনে।  শৈবালের জন্ম দিঘীর জলে, দিঘীর জলেই তার অবস্থান। দিঘী তাকে পরম মমতায় তার জলে স্থান দেয়। সেই জলেই শৈবালের বেড়ে ওঠা। শৈবালের উচিত দিঘীর প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়া। কিন্তু তা না করে মিথ্যে বাহাদুরি দেখায়। কেননা, শৈবালের ডগায় রাতের শিশির বিন্দু জমে। এক সময় তা দীঘির জলে পড়ে। অকৃতজ্ঞ শৈবাল তখন অহংকার করে এই বলে যে, সে দীঘিকে এক ফোঁটা পানি দিয়েছে। তার এই এক ফোঁটা পানি নিতান্তই তুচ্ছ যা দীঘির তেমন কোনো উপকারে আসে না। বরং এতে শৈবালের হীনমন্যতার পরিচয় পাওয়া যায়। আমাদের সমাজের অকৃতজ্ঞ মানুষগুলোও শৈবালের মতোই
শিক্ষা: মহৎ তারাই যারা মিথ্যে বাহাদুরির আশ্রয় নেন না। পরের কল্যাণ সাধনেই তাদের সুখ। আর অকৃতজ্ঞ ব্যক্তি সমাজের কাছে সব সময়ই মূল্যহীন। তারা কখনোই সমাজে বড় কিছু হতে পারে না

No comments

Powered by Blogger.