169. শুধালো পথিক ‘সাগর হতে কী অধীক ধনবান ?’ জ্ঞানী বলেন, ‘বাছা তুষ্ট হৃদয় তারো চেয়ে গরীয়ান।’

মানুষের জীবনের চাওয়া-পাওয়া এবং অভাববোধ একে অপরের সাথে সরাসরি জড়িত। প্রতিটি অভাব পূরণের পর মানুষের মনে নতুন নতুন অভাবের সৃষ্টি হয়। অভাব মানুষের মনে অতৃপ্তির জন্ম দেয়। তার চাওয়া এবং পাওয়ার কোনো সীমা থাকে না। সে যত পায়, তত চায়। মহাসমুদ্রে লুকিয়ে থাকা মনিমুক্তা, ধনসম্পদের মতো অফুরন্ত ভা-ারের মালিক সে হতে চায়।
তিল তিল করে গড়ে তোলা সম্পদের পাহাড় তাকে সন্তুষ্টি দিতে পারে না। সে কোনো কিছুতেই তৃপ্তি পায় না। সুখ-শান্তি তার কাছে সোনার হরিণ বনে যায়। ধন সম্পদের প্রতি লোভ তাকে করে তোলে যান্ত্রিক। সে সম্পদের নেশায় অন্ধ হয়ে যায়। সম্পদ আহরণের জন্য সে পৃথিবীর সকল কিছু ত্যাগ করে। সম্পদের লোভে সে ভুলে যায় মানুষের জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য। সম্পদ আহরণের উদ্দেশ্যে সে দুর্নীতি, অন্যায়,অবিচার, খুন ইত্যাদি জঘন্য কাজে লিপ্ত হতেও দ্বিধাবোধ করে না। কিন্তু তার এই অতৃপ্ত হৃদয় সুখ-শান্তির দেখা পায় না। সুখ তার কাছে মরীচিকার মতো ধরা দেয়। কিন্তু একজন প্রকৃত জ্ঞানী ব্যক্তি অল্প সম্পদেই তুষ্ট থাকেন। কারণ তিনি জানেন কীভাবে জ্ঞানের মাধ্যমে আত্মাকে সন্তুষ্ট করতে হয়। তিনি জানেন অতৃপ্ত মন বিনাশের কারণ। তার এই অল্পতেই তুষ্টি বা আত্মতৃপ্তি তার মনোবলকে করে অটুট। এই আত্মতৃপ্তিই তাকে জীবনের মূল লক্ষ্য সম্পর্কে সচেতন করে তোলে। আর কারণেই ধনী ব্যক্তির চেয়ে তুষ্ট হৃদয় অনেক বেশি মহৎ
শিক্ষা: পার্থিব জীবনে চাওয়া-পাওয়া এবং অভাববোধ চিরন্তন সত্য। মানুষের উচিত ধনসম্পদের লোভে মত্ত না হয়ে, কীভাবে অল্পতে তুষ্টির মাধ্যমে সুখী হওয়া যায় সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া। একমাত্র আত্মতৃপ্তিই পারে একজন মানুষকে প্রকৃত সুখের সন্ধান দিতে

No comments

Powered by Blogger.