157.যে জন দিবসে মনের হরষে জ্বালায় মোমের বাতি আশু গৃহে তার দেখিবে না আর নিশীথে প্রদীপ বাতি।

মানুষের অর্থ-সম্পদ সীমিত। আর সীমিত অর্থ-সম্পদ দিয়ে আমাদের অসীম অভাব পূরণ করতে হয়। যেমন খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা ইত্যাদি আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় অভাব। এসব অভাব দূর করতে না পারলে আমাদের জীবন চলতে পারে না। আবার কিছু অভাব আছে যেগুলো পূরণ না করেও
আমরা চলতে পারি। যেমন বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি, এসি, দামি পোশাক, দামি অলঙ্কার ইত্যাদি। কিন্তু যখন অর্থ-সম্পদ থাকে, তখন মানুষ ভবিষ্যতের চিন্তা না করে অপচয় করে। বিলাসিতা করে দিন কাটায়। বিলাসবহুল নিত্য নতুন জিনিসপত্র ক্রয় করে নিজের অর্থ-সম্পদ প্রদর্শনের জন্য। কিন্তু মানুষের জীবন সুখ সাফল্যে শেষ নাও হতে পারে। জীবনে নেমে আসতে পারে দারিদ্র্য, ব্যর্থতা। তখন সঞ্চিত অর্থ দিয়ে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি খোঁজা যায়। কিন্তু যদি কেউ সব অর্থ-সম্পদ বিলাসিতা করে নষ্ট করে তাহলে একদিন তাকে দিশেহারা হয়ে যেতে হয়। যে কিনা সারাজীবন বিলাস-বহুল জিনিসের পেছনে ছুটেছে, সে জীবনধারনের জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর অভাব মেটাতে ব্যর্থ হবে। তার জীবনে নেমে আসবে কেবল অভাব এবং দারিদ্র্য। বুদ্ধিমান সঞ্চয়ী মানুষ নিজের এবং পরিবারের কল্যাণে খারাপ সময় মোকাবিলার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সঞ্চিত রাখে। শুধু ব্যক্তিগত ক্ষেত্রেই নয় উন্নত দেশের সরকারও তার দেশের ভবিষ্যতের জন্য গ্যাস, তেল ইত্যাদি সঞ্চিত রাখে। যেমন যুক্তরাষ্ট্রের ভূগর্ভে বিপুল পরিমাণ তেল আছে, তা সঞ্চিত রেখেছে ভবিষ্যতের জন্য। এখন যুক্তরাষ্ট্র তেল আমদানি করে ব্যবহার করে। তেমনই অস্ট্রেলিয়াও নিজস্ব সমুদ্রসীমায় মাছ ধরে না। তারা মাছ আমদানি করে। কিন্তু আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি ইত্যাদি অপচয় করা হয়। অপচয়রোধ করা না গেলে শীঘ্রই আমাদের এসবের অভাবে পড়তে হবে
শিক্ষা: মনের ক্ষণস্থায়ী আনন্দের জন্য বিলাসিতা করে অর্থ-সম্পদ অপচয় করা উচিত নয়। অপচয় না করলে সাধারণত অভাবও হয় না। অপরের সাহায্য ছাড়াই দুর্দিনে দারিদ্র্যের মোকাবেলা করা যায়

No comments

Powered by Blogger.