183. সাহিত্য জাতির দর্পণস্বরূপ।
শব্দার্থ : দর্পণ:-আয়না।
সাহিত্যকে একটি জাতির দর্পণ বা আয়নার সাথে তুলনা করা যায়। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আমরা আমাদের নিজ ছবি দেখতে পাই। একইভাবে কোনো জাতির সামাজিক, রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের চিত্র সাহিত্যের মাধ্যমে জানা যায়। সমাজ ও মানবজীবন সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সমাজ জীবনের বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে সাহিত্য রচিত হয় বলে সাহিত্যকে সমাজের প্রতিফলন বলা
হয়। সাহিত্য মানুষকে আনন্দ দান করে। এটি মানুষের মনে প্রেরণা দেয় এবং জানার আগ্রহ বাড়িয়ে দেয়। সাহিত্য ভীরুকে সাহসী করে তোলে। দেশের সংকটময় মুহূর্তে সাহিত্য জনগণের মনের উৎসাহ ও উদ্দীপনা দান করে। পৃথিবীর অনেক কবি-সাহিত্যিক আছেন যারা সাহিত্য রচনা করে অমর হয়ে আছেন। কবি সাহিত্যিকরা পারেন কোনো দেশ বা জাতিকে বিশ্বের কাছে সুন্দরভাবে তুলে ধরতে। কাজী নজরুল ইসলাম ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সময় সাহিত্য রচনার মাধ্যমে জনগণের মনে প্রেরণা দান করেছিলেন। জীবনানন্দ দাশ তাঁর কাব্যগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রকৃতির বৈচিত্র্য বর্ণনা করেছেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের সোনার বাংলাকে সুন্দরভাবে বিশ্বের দরবারে উপস্থাপন করেছেন। আবার বিদেশি সাহিত্যের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন জাতির আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থার বর্ণনা পাই। যেমন, রাশিয়ার একজন বিখ্যাত কথা সাহিত্যিক হলেন লিও তলস্তয়, তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ‘ওয়ার এন্ড পিস’ এর মাধ্যমে আমরা সমগ্র রাশিয়ার আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারি। শুধু ব্যক্তিগত জীবনে নয়, জাতীয় জীবনেও সাহিত্যের গুরুত্ব অপরিসীম। কোনো জাতির অতীত ইতিহাস ও ঐতিহ্য সাহিত্যে স্থান পায়। যে জাতির সাহিত্য যত বেশি সমৃদ্ধ সে জাতি তত বেশি উন্নত। বাংলাদেশ একটি ছোট আয়াতনের দেশ। এ দেশের সাহিত্য ও সংস্কৃতি অনেক সমৃদ্ধ। তবে সাহিত্য বলতে শুধু কবি বা সাহিত্যিকদের রচনা নয়। এটি একটি জাতির সামগ্রিক সংস্কৃতিকে বহন করে।
শিক্ষা: পৃথিবীর বিভিন্ন জাতির পরিচয় সাহিত্যে পাওয়া যায়। এই সাহিত্যের মাধ্যমেই বিভিন্ন দেশ ও জাতির পরিচয় গোটা পৃথিবীর সামনে তুলে ধরা যায়।
No comments