178. সম্পদে যাদের ঠেকে না চরণ মাটির মালিক তাহারাই হন।

মানব সভ্যতার ইতিহাস অনেক পুরানো। এই সভ্যতা এক দিনে গড়ে উঠেনি। সভ্যতার পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে শ্রমজীবী মানুষ। সভ্যতার বিকাশের শুরুতে অর্থনীতির বিষয়টি তেমন গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। তখন সমাজে সম্পদের মালিকানা বিষয়টি তেমন জটিলতার সৃষ্টি করেনি। সভ্যতা যখন ধীরে ধীরে পরিবর্তন হতে থাকে তখন মানুষের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাও পরিবর্তন হতে থাকে।
মানুষ যখন সভ্যযুগের দিকে অগ্রসর হয় তখন অর্থনীতিকে কেন্দ্র করে জমির মালিকানার বিষয়টি চলে আসে। তখন থেকেই সমাজে ভূ-স্বামী ভূমিহীন শ্রেণির উদ্ভব হয়। ভূ-স্বামী পুঁজিপতিরা জমির মালিক হয়ে যায় এবং ভূমিহীন মানুষগুলো আরো নিঃস্ব হয়ে যায়। অথচ এই শ্রমজীবী মানুষগুলোই পৃথিবীকে সুন্দর করে সাজিয়েছেন। তারা মাঠে ফসল উৎপাদন করে এবং কল-কারখানায় কাজ করে। এভাবে মাটির সাথে শ্রমজীবী মানুষের এক ধরণের সম্পর্ক গড়ে উঠে। আর যারা পুঁজিপতি শ্রেণি তারা শোষণে ব্যস্ত। শ্রমজীবী মানুষকে ঠকিয়ে পুঁজিপতি শ্রেণির মানুষেরা সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলে। পুঁজিপতিরা ভোগ-বিলাসিতা করে বেড়ায়। তারা গাড়িতে চড়ে, ইটপাথরের দালানকোঠায় বসবাস করে। তাদের পা মাটির মধ্যে পড়তেই চায় না। মাটির সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু পুঁজিপতি শ্রেণিরাই আবার ভূমি জমির মালিক। যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দিন-রাত পরিশ্রম করে তারাই আজ বঞ্চিত। শ্রমিকরা তাদের প্রাপ্ত মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পৃথিবীর সভ্যতার ইতিহাসের প্রতিটি ইটের সাথে শ্রমিকের গায়ের ঘাম জড়িত। তারা রোদে পুড়ে আবার জলে ভিজে। কিন্তু সম্পদের মালিক হচ্ছে পুঁজিপতি শ্রেণি। সামাজিক সম্পদের সঠিক উৎপাদন এবং সুষম বণ্টন ব্যবস্থাই পারে এই পার্থক্য দূর করতে
শিক্ষা: একটি দেশের সার্বিক উন্নয়নে শ্রমজীবী মানুষ ব্যাপকভাবে অবদান রাখে। তাই শ্রমিকদের ব্যাপারে পুঁজিপতি শ্রেণির আপোষমূলক মনোভাব থাকা উচিত। তাহলেই জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব হবে

No comments

Powered by Blogger.