131. মনের আজ কহ যে ভাল-মন্দ যাহাই আসুক সত্যরে লও সহজে।
মানবজীবন বিচিত্র বর্ণিল। এই জীবন বিকাশে সুখ-দুঃখ, বিরহ-বেদনা, উত্থান-পতনের মতো প্রতিকূল পরিবেশের প্রাচীর ডিঙিয়ে মানুষকে তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে হয়। মানবজীবনে চলার পথে বাধা-বিঘ্ন থাকবেই। মানুষকে ধৈর্যধারণ করে কঠিন সত্য ও প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। জীবনের রূঢ় বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে জীবন সংগ্রামে টিকে থাকতে হয়। এজন্য বিপদশঙ্কুল পথ অতিক্রমে, জীবনের
কঠিন দুঃসময়ে টিকে থাকতে সর্বাগ্রে দরকার মনোবল। সত্যকে আয়ত্ব করা ও মেনে নেওয়া যদিও খুব সহজ নয়, তবুও পৃথিবীতে সাহস, মনোবল ও মনুষ্যত্বের প্রকৃত পরিচয় মেলে সত্যকে সহজে গ্রহণ ও প্রকাশ করার মধ্যেই। সত্যের ভয়ে ভীত হওয়া দুর্বল চিত্তের নিত্য চিত্র। কিন্তু মানুষের জীবনে দুঃসময় চিরস্থায়ী নয়। অন্ধকারের পরে যেমন আলো আসে, দুঃসময়ের পরে তেমনি মানবজীবনে সুখ ও সুদিন আসে। মানুষ দুঃখ, মন্দ আর বিপদকে ভয় করে। সামান্য বিপদেই সে বিচলিত হয়ে পড়ে। বাস্তব জীবনে বিপদ ও দুঃখের প্রয়োজন আছে। দুঃখের অগ্নিপরীক্ষার মধ্য দিয়েই মানুষের চিত্ত ও মন শুচিশুভ্র হয়। আত্মজিজ্ঞাসায় সত্যের সন্ধান মিললে তবেই জগতে নিজেকে জানতে পারা যায়। আর সত্যের কারণে সামনে আসতে পারে বঞ্চনা, সবশেষে মৃত্যু। মিথ্যার বিস্তারে সত্য সাময়িক ক্ষীণ হলেও কালক্রমে সত্যের ঔজ্জল্য প্রস্ফূটিত হয়। অর্থাৎ বাস্তবতা ও সত্য যত কঠিনই হোক, সেটিকে ভালোবেসে মনের শক্তি দিয়ে অতিক্রম করতে পারলেই জীবনে সাফল্য লাভ করা সম্ভব। জীবনে চরম দুঃখ-কষ্টের মাঝেও কঠিন বাস্তবকে সহজ সত্য হিসেবে গ্রহণ করে সকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করাই মানব জীবনের পরম সার্থকতা।
শিক্ষা: জীবনের চরম ক্রান্তিকালে দুঃখ, বিপদ, বেদনায় ভীত না হয়ে যুক্তি দিয়ে বিচার করে সহজে সত্যকে মেনে নিয়ে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব।
No comments