109. ফ্যাশনটা হল মুখোশ, স্টাইলটা হল মুখশ্রী।

সৃষ্টি ধ্বংসের সুপরিকল্পিত প্রভাবে গড়ে ওঠেছে আমাদের আজকের যুগের সভ্যতা সংস্কৃতি। সভ্যতা সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে প্রতিটি জাতিই কম বেশি অনুকরণ করে থাকে। তাই সভ্যতার ধারক বাহক মানুষও অনুকরণপ্রিয়। তবে অনেক সময় মানুষ অন্ধ অনুকরণের মাধ্যমে তার নিজস্বতা স্বাতন্ত্র্য ভুলে যায়। কোনো জাতি যদি কখনো তার নিজস্ব কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ভুলে যায়, অনুকরণে নিজের আত্মতৃপ্তি
খুঁজে পায়, তখন তার অন্তরের হীনতাই প্রকাশ পায়। কারণ প্রতিটি জাতির নিজস্ব সত্তার সাথে তার কৃষ্টি সংস্কৃতি, সভ্যতার যোগ অভিন্ন। কারণ একটি জাতির বৃহৎ অর্জনগুলো সংস্কৃতি সভ্যতার দ্বারাই নির্ণীত হয়। তাই মানুষের অন্ধ অনুকরণপ্রিয়তা একটি জাতির জন্য নীতি বিগর্হিত কাজ। এটা আসলে মুখোশের আড়ালে নিজেকে ঢেকে রাখার মতোই। তবে অনুকরণ সবক্ষেত্রেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না। অন্যের ভালো গ্রহণ করা বা চর্চা করা কোনো দূষনীয় বিষয় নয়। কারণ সমাজ সংসারে উন্নত জাতির কাছ থেকে গ্রহণ করার মতো অনেক কিছু আছে। তবে আমাদের কাজ হলো তাদের মন্দটুকু বাদ দিয়ে ভালোটুকু যা আছে তা গ্রহণ করা। আর কাজটি যদি আমরা সফলভাবে করতে পারি এবং তা আমাদের সভ্যতা সংস্কৃতির সাথে আত্তীকরণ করি তাহলে আমাদের দেশ জাতির জন্য কল্যাণকরই হবে। এতে আমাদের সভ্যতা সংস্কৃতি অনেক বেশি পরিমার্জিত এবং পরিশোধিত হবে। সর্বদাই খেয়াল রাখতে হবে আমরা যেন আমাদের শিকড়কে ভুলে না যাই। যেকোনো বিষয়কে ভাল-মন্দ বিচার করে অনুকরণ বা অনুসরণ করলে মানুষের নিজস্ব চিন্তা চেতনার বিকাশ ঘটে। সমস্যা হয় তখনই যখন আমরা ভালোমন্দ বিচার না করে অন্ধভাবে অপরকে অনুকরণ করতে থাকি। এতে ব্যক্তির হীনতা তৈরি হয় এবং নিজের স্বকীয়তা ধ্বংস হয়। তাই নিজের হীনতা-দীনতা প্রকাশ না ঘটিয়ে স্বকীয়তা প্রকাশ করাই আমাদের কর্তব্য
শিক্ষা: অপরের অনুকরণের মুখোশ না পরে নিজের ব্যক্তিত্বকে নিজের মতো করে বিকশিত করতে হবে। নিজের ব্যক্তিত্ব, পছন্দ-অপছন্দ প্রকাশ করা অনেক জটিল হলেও আমরা নিয়মিত চর্চার মাধ্যমে কাজটি যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে পারি

No comments

Powered by Blogger.