106. প্রয়োজনে যে মরিতে প্রস্তুত, বাঁচিবার অধিকার তাহারই।

মানবজীবন ক্ষণস্থায়ী। জন্য মৃত্যু ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে থাকলে জীবনকে পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করা যায় না। মৃত্যু ভয়ে সদা ভীত যে ব্যক্তি সে বেঁচে থেকেও মৃত। বাঁচার মতো বাঁচতে হলে মহৎ ত্যাগের মধ্য দিয়ে জীবনকে সার্থক করে তুলতে হবে। মৃত্যুঞ্জয়ী মানুষের ত্যাগের মধ্য দিয়েই গড়ে উঠেছে সমাজ সভ্যতা। এই সকল ব্যক্তিরাই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার যোগ্য। প্রতি মুহূর্তে মৃত্যু ভয়ে ভীত যে ব্যক্তি তার জীবন
অর্থহীন। জীবনকে সার্থক করে তুলতে হলে মৃত্যু ভয় পরিত্যাগ করতে হবে। বস্তুত কাজের মধ্যেই জীবনের প্রকৃত মর্যাদা। আর যেকোনো কাজই কমবেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তবে কোনো কোনো কাজে এই ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। যারা প্রকৃত মানুষ তারা কোনো কাজেই ভয় করে না বরং সাহসের সঙ্গে এগিয়ে যায়। জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে এরাই খনি থেকে মূল্যবান সম্পদ তুলে আনে। এরাই স্বাধীনতা মুক্তি সংগ্রামের ডাকে সাড়া দিয়ে ঘর ছেড়ে যুদ্ধের ময়দানে গিয়ে অকাতরে প্রাণ দেয়। পৃথিবীকে মানুষের বাসযোগ্য করে তুলতে এইসব মৃত্যুঞ্জয়ী মানুষেরাই যুগে যুগে প্রাণ দিয়েছে বন্য প্রাণীর হাতে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে। এসব মরণজয়ী সাহসী বীরের হাত ধরেই সমাজ জাতীয় জীবনে সফলতা আসে। যারা প্রকৃত বীর তারা মৃত্যুকে তুচ্ছ করে সফলতার পথে এগিয়ে যায়। পথে যদি তাদের মৃত্যু আসে তবু তারা হাসিমুখে সেই মৃত্যুকে বরণ করে নেয়। বেঁচে থাকা তাঁদের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য নয় বরং আসন্ন মৃত্যুকে হাসিমুখে বরণ করার মধ্যে দিয়ে তারা লাভ করে অমরত্ব। যেমনিভাবে পৃথিবীর বুকে অমর হয়ে আছেন সক্রেটিস, আইনস্টাইন, নিউটন, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, চিত্তরঞ্জন দাশ প্রমুখ। এই অমরত্ব লাভের জন্য প্রয়োজন সাহসী মনোভাব, মহৎ কর্ম এবং প্রয়োজনবোধে আত্মত্যাগ
শিক্ষা: মৃত্যুর মতো ভয়াবহ সত্যকে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। কিন্তু তাই বলে জীবনের প্রতিটি আনন্দঘন মুহূর্ত মৃত্যুভয়ে নষ্ট করা বোকামী। বরং মৃতুকে তুচ্ছ জ্ঞান করে জীবনকে যে উপভোগ করতে পারে একমাত্র সে- বেঁচে থাকার স্বাদ নিতে সক্ষম

No comments

Powered by Blogger.