76. দুঃখের মতো এত বড় পরশ পাথর আর নাই।
সুখ-দুঃখের উপস্থিতিতেই মানুষের জীবনচক্র। দুঃখ মানুষকে জাগ্রত ও আলোকিত করে তোলে। দুঃখবোধ থেকেই প্রজ্ঞার পরিচয় পাওয়া যায়। এটি মানুষকে সঠিক জীবনবোধের পথ দেখায়। দুঃখ আছে বলেই মানুষ দুঃখকে জয় করতে চেষ্টা করে। দুঃখ মানুষের কর্মক্ষমতা, জ্ঞান, অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি করে। এটি মানুষকে সকল বাধা অতিক্রম করে খাঁটি মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়তা করে। তাই শেক্সপিয়র বলেছেন, "Life is not
a bed of rose" পৃথিবীতে যা কিছু মহান কল্যাণকর সবকিছুই দুঃখ ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে। দিন আছে বলেই আমরা রাতকে চিনতে পারি, তেমনি দুঃখ আছে বলেই আমরা সুখের গুরুত্ব বুঝতে পারি। দুঃখের দহন শেষে মানব মনে যে আনন্দ আসে সেটাই স্বর্গীয় সুখ। এটি সঠিক, সত্য ও সুন্দরের পথ দেখায়। দুঃখ মানুষকে ধ্যানী, জ্ঞানী, পরিশ্রমী ও ঈশ্বরমুখী করে তোলে। এ কারণেই মহামানবরা দুঃখকে পরশ পাথরের সঙ্গে তুলনা করেছেন। কবির ভাষায়, "Seeetest songs are those that tell a suddest thought" মানুষ চিরদিনই সুখের অন্বেষণকারী। আর সুখ পেতে হলে দুঃখ কষ্টকে বরণ করে সম্মুখে এগিয়ে যেতে হবে। দুঃখবোধের জন্যে অনেকের জীবন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। কিন্তু যারা সাহসী তারা দুঃখকে জয় করে সুখ খুঁজে নেয়। দুঃখকে পরিত্রানের মাধ্যমেই মহানবী (স.) হতে পেরেছিলেন মানবত্রাতা, যীশু খ্রিস্ট, গৌতম বুদ্ধ হয়েছিলেন মানব মুক্তির সাধক। জীবনে দুঃখ আছে বলেই আমরা সুখের অন্বেষণ করি। পরশ পাথর যেমন লোহাকে মহামূল্যবান স্বর্ণে পরিণত করে, তেমনি দুঃখরূপ পরশ পাথরের ছোঁয়ায় মানুষও রূপান্তরিত হয় সোনার মানুষে।
শিক্ষা: দুঃখের মধ্য দিয়েই প্রকৃত মানবসত্ত্বার বিকাশ ঘটে। দুঃখ মানুষকে সংগ্রামী, বিবেকবান আত্মপ্রত্যয়ী ও উদার হতে শিক্ষা দেয়।
No comments