34.উদয়ের পথে শুনি কার বাণী, ভয় নাই ওরে ভয় নাই নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান, ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।
মানুষ পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পর মৃত্যুবরণ করে। মানুষের মৃত্যুর পর স্বভাবতই তাকে আর কেউ মনে রাখে না। জন্ম ও মৃত্যুর এই মাঝামাঝি সময়ে মানুষ যে সময়টুকু পৃথিবীতে অবস্থান করে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই সময়ের কর্মফলই তার পরিচয়কে সুস্পষ্ট করে। জীবনে মানুষ নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে সচেষ্ট হয়। এই প্রতিবন্ধকতাকে রুখতে তাদের নানা আয়োজন, উদ্যোগ চোখে পড়ে। লক্ষ্যকে পূরণ করতে গিয়ে কেউ বেছে নেয় অন্যায়ের পথ। ভোগ-বিলাসে মত্ত হয়ে তারা নিতান্ত আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ে। জীবনাবসানকালে পৃথিবীর বুকে তারা ঘৃণার পাত্র হিসেবে চিহ্নিত হয়। জীবনে ও মরণে উভয় কালেই তারা ঘৃণিত। অন্যদিকে যারা সৎ কাজ করে, মানবকল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দেয় তারা স্থান পায় গৌরবময় ইতিহাসের পাতায়। যুগে যুগে যেসকল মানুষ আত্মত্যাগ করে গেছেন তারা হয়েছেন মহামানব। এসব মহামানব সকল ভয়-ভীতি, বাধা-বিপত্তিকে উপেক্ষা করে মৃত্যুকে জয় করেছেন। তাঁদের দেখানো পথ সকল অন্ধকারকে দূরে ঠেলে দিয়েছে আলোর সন্ধান। মানব মুক্তির জন্য তারা দ্ব্যর্থহীন চিত্তে কাজ করে গেছেন। চে গুয়েভারা, নেলসন ম্যান্ডেলা, আব্রাহাম লিংকন প্রমুখ ব্যক্তিগণের অবদান চিরদিন পৃথিবীর বুকে লেখা থাকবে তাঁদের আত্মত্যাগের জন্য। সংকট উত্তরণে এসব মহামানবের আবির্ভাব ঘটেছিল, ভবিষ্যতেও ঘটবে। সমাজ দেশ ও জাতির কল্যাণে সামান্য একটু কাজই বদলে দিতে পারে জনসাধারণের সাধারণ জীবনপরিচয়। সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে ভয়-ভীতিকে বিসর্জন দিয়ে দ্বিধাহীন চিত্তে যাঁরা নিঃশেষ জীবন দান করতে পারেন তারাই সভ্যতার অগ্রগামী পথিক।
শিক্ষা: জীবনে সফলতা অর্জনের মূল চাবিকাঠি হলো উত্তম পথটি নির্বাচন করা। মানবকল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করাই হলো সেই উত্তম পথ। তাই আমাদের মানবকল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত করা উচিত।
No comments