31. আলো বলে, অন্ধকার, তুই বড় কালো অন্ধকার বলে, ভাই তাই তুমি আলো।

প্রকৃতির অমোঘ নিয়মেই প্রকৃতিতে আমরা আলো এবং অন্ধকারের উপস্থিতি দেখতে পাই। প্রতিনিয়ত যথা সময়ে দিনের শেষে পৃথিবী অন্ধকারের কালো চাঁদরে ঢেকে যায়। রাতের আঁধার কাটলে সকালে পৃথিবীর পৃষ্ঠদেশ আবার সূর্যের আলোয় আলোকিত হয়। প্রাকৃতিক নিয়মেই এমনটা ঘটে। দিনের স্নিগ্ধতা আর রাতের কোমলতা এসব কিছুকে সৃষ্টিকর্তার অফুরন্ত নিয়ামত হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। সুন্দর এই পৃথিবীতে পরস্পর বিপরীতধর্মী বিষয় বস্তুসমূহের মধ্যে তীব্র আকর্ষণ বিরাজ করে। এসব উপাদানের দ্বান্দ্বিক পালা
বদল প্রক্রিয়া সর্বদা সচল এবং অস্তিত্বমান। জন্ম-মৃত্যু, সৃষ্টি-ধ্বংস, আলো-আঁধার, আনন্দ-বেদনা, সুখ-দুঃখ এসব কিছুই পরস্পরের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত, যদিও বৈশিষ্ট্যগতভাবে এরা একে অপরের বিপরীত। সৃষ্টির প্রতিটি জীবের কাছে নিজের জীবন অমূল্য সম্পদ। জন্মের পর মৃত্যু অবধারিত বলেই বেঁচে থাকাটা এত মধুর। পৃথিবীতে মৃত্যুর উপস্থিতি না থাকলে জীবনের কোনো মূল্যই থাকতো না। ধ্বংস সব সময়ই অমঙ্গলজনক এবং এটা কারো কাম্য নয়। ধ্বংস পৃথিবীর বুকে কান্না, হাহাকার, আর্তনাদ ডেকে আনে। ধ্বংসের এমন ভয়ানক রূপ আছে বলেই মানুষ সৃষ্টিকে লালন করে। মানুষ যখন অসুস্থ হয়ে পড়ে শুধুমাত্র তখনই সুস্থতার গুরুত্ব বুঝতে পারে। সেজন্যেই মানুষ তার সুস্বাস্থ্য রক্ষা করতে চায়। সুখ-দুঃখও তেমন বিপরীতধর্মী উপাদান বলে একে অপরের পরিপূরক। দুঃখ মানুষের মনকে যদি ব্যথিত করতে না পারতো তাহলে মানুষ সুখ আনন্দবোধের মর্ম বুঝতে পারতো না। সুখ লাভের আশায় মানুষ দুঃখ-কষ্টকে হাসিমুখে আলিঙ্গন করতে রাজি হয়। ঠিক একইভাবে প্রকৃতিতে অন্ধকারের উপস্থিতি আছে বলেই আলো এত মহিমাময়। অন্ধকার না থাকলে আলোর গৌরব এবং দীপ্তি এসব কিছুই ম্লান হয়ে যেত
শিক্ষা: প্রকৃতির এই বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যসমূহ পৃথিবীকে সুশোভিত করে তুলেছে। এই উপাদানসমূহের একটির অস্তিত্ব অন্যটিকে বাদ দিয়ে কল্পনা করা যায় না

No comments

Powered by Blogger.