226.মাদকাসক্তি: কারণ ও প্রতিকার / মাদকাসক্তির অীভশাপ / মাদকাসক্তি ও যুবসমাজ / মাদক দ্রব্য ও আমাদের যুব সমাজ
ভূমিকা
পৃথিবীতে মানুষ কোনো না কোনো কিছুর প্রতি অনুরক্ত বা আসক্ত হয়ে পড়ে। আর এটা যখন কল্যাণময় বা সৃষ্টিশীল নৈপুণ্যে উদ্ভাসিত না করে কোনো নেশা জাতীয় দ্রব্যের মধ্যে সমর্পণ করে নিজেকে ধ্বংসের মধ্যে নিয়ে যায়, তখন তাকে মাদকাসক্ত বলা হয়। মাদকাসক্ত বলতে মত্ততাদায়ক দ্রব্যের প্রতি একান্ত অনুরক্ত হওয়াকে বুঝায়।
মাদকদ্রব্যের শ্রেণিকরণ
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংজ্ঞা অনুযায়ী তামাকজাত দ্রব্য মাদকের পর্যায়ভুক্ত এগুলো হল-(ক)
নস্যি, (খ) জর্দা, (গ) সিগারেট, (ঘ) চুরুট, (ঙ) বিয়ার, (চ) ওয়াইন, (ছ) হুইস্কি, (জ) ব্রান্ডি ইত্যাদি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ভরতা সৃষ্টিকারী ওষুধের একটা আন্তর্জাতিক শ্রেণিবিন্যাস করে দিয়েছে। নিচে এ নির্ভরতা
সৃষ্টিকারী ওষুধের শ্রেণিকরণ দেখান হল-
১. আচ্ছন্নতা উদ্রেককারী মাদক: মরফিন, হেরোইন, প্যাথেড্রিন।
২. উত্তেজক ধরনের মাদক: গাজা, চরস, ভাঙ, সিদ্ধি।
৩. ভ্রম বা মায়া উৎপাদনকারী মাদক: LSD, মেসক্যানিন।
ক. পারিবারিক কারণসমূহ:
১. পারিবারিক কারণ আবার কয়েক ধরনের হতে পারে। যেমন:
ক) যেসব পরিবারের পিতামাতা অর্থনৈতিক ও অন্যান্য কাজকর্মে অতিশয় ব্যস্ত থাকার জন্য সন্তান-সন্ততিদের আচার-আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে তথা তাদের ভারসাম্যপূর্ণ ব্যক্তিত্ব গঠনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সময় দিতে ব্যর্থ হন, সেসব পরিবারের সন্তান-সন্ততি বাবা-মার অবাধ্য হয়ে গড়ে উঠতে পারে। এসব পরিবারের কর্তাব্যক্তির অজ্ঞাতসারে সন্তান-সন্ততি অনেক সময় অবাঞ্ছিত অভ্যাস ও আচরণ রপ্ত করে যার মধ্যে মাদকাসক্তি অন্যতম।
খ) পরিবারের বাবা-মা বা অন্য কোনো বয়স্ক ব্যক্তি যদি মাদকাসক্ত হন তাহলে তার প্রভাব সন্তানদের কারো না কারো ওপর গিয়ে পড়তে পারে।
গ) যেসব পরিবারে পিতামাতার মধ্যে দীর্ঘদিন ব্যক্তিত্বের সংঘাত চলতে থাকে অথবা যে সব পরিবারের স্বামী-স্ত্রী পৃথক পৃথক স্থানে (মনোমালিন্যের কারণে) বসবাস করে অথবা, যেসব পরিবারে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে, সেসব পরিবারের সন্তান-সন্ততির মধ্যে হতাশা ও উদ্দেশ্যহীনতা সৃষ্টি হতে পারে। এর ফলেও মাদকাসক্তিসহ অন্যান্য অসামাজিক আচরণ রপ্ত হওয়া বিচিত্র নয়। বস্তুত, মাদকাসক্ত কিশোর যুবকদের অনেকেই উচ্চ, মধ্য ও উচ্চবিত্ত যেসব পরিবার থেকে আগত- সেসব পরিবারের উপরিউক্ত কোনো না কোনো সমস্যা রয়েছে।
২. উদ্বেগ-উত্তেজনা: বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর আমাদের সমাজে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্রুত পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। সমাজের সব ক্ষেত্রেই যেন একটা চাওয়া পাওয়ার দ্বন্দ্ব। চারদিকে নানা অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা। দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্র-পত্রিকাগুলোর অধিকাংশ খবরই অত্যাচার, অনিয়ম, অপরাধ, দুর্ঘটনা ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে। নানান কারণে কাজের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অনেকেই। কেউবা যোগ্যতা থাকতেও সঙ্গত বা অসঙ্গত কারণে নিয়োগ পাচ্ছে না, পাচ্ছে না প্রমোশন। কেউবা কাজ করেও পাচ্ছে না কোনো মূল্যায়ন। সামান্য ধন্যবাদ দিতেও অনেকের মধ্যেই দেখা যায় কৃপণতা। হাড়ভাঙা খাটুনি খেটেও পরিবারে নানা অভাব অভিযোগ। বস্তুত, এ সবকিছুই উদ্বেগ উত্তেজনার কারণ। এটা থেকে সাময়িক মুক্তির জন্যে কেউ বা ক্রমে ক্রমে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে।
৩. সঙ্গদোষ: ‘সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ’- প্রবাদটি দীর্ঘদিনের সামাজিক অভিজ্ঞতার ফসলই বলা চলে। পরিবারের বাইরে কিশোর যুবকেরা পাড়া-মহল্লায় ও স্কুল-কলেজে সঙ্গী-সাথীদের সংস্পর্শে আসে। তাদের অভ্যাস ও আচার-আচরণ দ্বারা কিশোর যুবকেরা প্রভাবিত হয়। সঙ্গদোষের কারণেও মাদকাসক্তি সৃষ্টি হতে পারে।
৪. কৌতূহল: অনেকেই মনে করেন যে, সাম্প্রতিক বাংলাদেশে কিশোর, যুবক এমনকি বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে মাদকাসক্তি দ্রুত বিস্তারের অন্যতম প্রধান কারণ কৌতূহল। অনেকেই মাদক দ্রব্যের গুণাগুণ ও কার্যকারিতা সম্পর্কে শুনতে এবং কৌতূহল নিবারণের জন্য দু’একবার সেবন করতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। কিন্তু কৌতূহল নিবারণ করতে গিয়ে ক্রমে ক্রমে জ্ঞাত বা অজ্ঞাতসারে মাদকদ্রব্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। তখন আর ফিরে আসার উপায় থাকে না।
৫. অনুকরণ-অনুসরণ: মাদকাসক্তির আরেকটি কারণ অনুকরণ-অনুসরণ। এই অনুকরণ-অনুসরণ নানাভাবে সংঘটিত হয়। যেমন: বড়দের অনুসরণ ছাড়াও আমাদের দেশের ছেলে-মেয়েদের অনেকে বিদেশি পত্রপত্রিকা পাঠে ও ছবি-সিনেমা দেখে মাদকাসক্তিকে একটি অনুকরণীয় তথ্য বাহাদুরিমূলক ফ্যাশন বিবেচনা করে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে।
৬. প্রেমে ব্যর্থতা: প্রেমে ব্যর্থতার কারণে অথবা প্রেমিক-প্রেমিকা কর্তৃক প্রভাবিত বা প্রতারিত হয়ে অথবা প্রেমিক-প্রেমিকার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেবার অভিমান বশে কেউবা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে বলেও অনেকে মনে করেন।
খ. প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক কারণ
বাংলাদেশে মাদকাসক্তি বৃদ্ধির জন্য কতিপয় প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক কারণকেও দায়ী করা হয়। এগুলো হলো :
১. মাদক দ্রব্যের সহজলভ্যতা ও প্রশাসন: আমাদের সমাজে ইদানীং মাদকাসক্তি বৃদ্ধির অন্যতম কারণ মাদক দ্রব্যের সহজলভ্যতা। বাংলাদেশে মাদক দ্রব্যের প্রবেশ পথগুলো পুরোপুরি বন্ধ করতে না পারা প্রশাসনিক দুর্বলতাকেই প্রমাণ করছে। প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে এখানে মাদক দ্রব্য ক্রমেই বেশি পরিমাণে আসছে। ফলে অনেকের কাছেই মাদক দ্রব্য হয়ে পড়ছে সহজলভ্য। এছাড়া যেসব এলাকায় অবৈধ উপায়ে সহজেই মাদক দ্রব্য পাওয়া যায় সেসব এলাকায় প্রশাসন অধিকতর কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারছে বলে মনে হয় না।
২. রাজনৈতিক অস্থিরতা: একটি সুষ্ঠু, যৌক্তিক ও নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ব্যক্তির রাজনৈতিক আচরণকে স্বাভাবিক তথা যুক্তিসিদ্ধ ধারায় প্রবাহিত করতে পারে। কিন্তু নানা ধরনের অবাঞ্চিত কারণে সেটার অভাবের ফলে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যক্তির রাজনৈতিক আচরণ ও চিন্তাকে স্বাভাবিক ধারায় এগুতে দেয় না। এমন অবস্থায়ও কেউ কেউ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে।
গ. অর্থনৈতিক কারণ
মাদক দ্রব্য গ্রহণের পেছনে যেসব অর্থনেতিক কারণ দায়ী সেগুলো নিচে আলোচিত হলো-
১. বেকারত্ব ও দারিদ্র্য: বর্তমানে বাংলাদেশে বেকার সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করেছে। বেকারত্ব বয়ে আনে হতাশা। তদুপরি, বেকার জীবনে প্রচুর অবসর সময় থাকে। বেকার জীবনের অবসর সময় কাটে নানা দুশ্চিন্তা ও উদ্বিগ্নতার মধ্য দিয়ে। ফলে, বেকারত্বের অভিশাপ থেকে সাময়িক মুক্তির জন্যে কেউবা নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে।
যদিও বেকারত্ব দারিদ্র্যের অন্যতম কারণ তথাপি বেকার ব্যক্তি দরিদ্র নাও হতে পারে। বস্তুত, দারিদ্র্যতা মাদক দ্রব্য ব্যবসায়ে জড়িয়ে পড়ার অন্যতম কারণ। কখনো বা মাদক ব্যবসায়ীরা দরিদ্র ব্যক্তিদের কাজে লাগায়। আর ব্যবসায় জড়িয়ে পড়লে দরিদ্রের পক্ষে মাদকাসক্ত হওয়াটাই স্বাভাবিক।
২. উচ্চাভিলাষ চরিতার্থে মাদকদ্রব্যের ব্যবসায়: সহজ পন্থায় দ্রুতগতিতে রাতারাতি ধনী হবার উচ্চ বাসনা যারা পোষণ করে তাদের কেউ কেউ সব দেশেই মাদক দ্রব্যের অবৈধ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়তেও কুণ্ঠাবোধ করছে না। এরা অন্যদের কাছে মাদকদ্রব্য সহজলভ্য করছে এবং নিজেরা মাদকাসক্ত হচ্ছে।
ঘ. ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণ
অনেকেরই ধারণা বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থা এমন যে, দেশটির ওপর দিয়ে সহজেই অবৈধভাবে মাদক দ্রব্য আনা নেওয়া হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মাদকদ্রব্য চোরাচালানের জন্যে বাংলাদেশকে বানানো হয়েছে করিডোর।
১. বাংলাদেশ করিডোর: বাংলাদেশে মাদকদ্রব্যের সহজলভ্যতার জন্যে দেশটির ভৌগোলিক অবস্থানকেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দায়ী করা হয়েছে। কেননা, যেসব এলাকায় আফিম, হেরোইনের উৎস ও পপি উৎপাদিত হয় তার মাঝখানে বাংলাদেশ অবস্থিত। যেমন, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বে মায়ানমার, থাইল্যান্ড ও লাওস, গোল্ডেন ট্রায়াংগেল এদের অভিন্ন সীমান্তের নাম। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে ভারত-নেপাল সীমান্ত (গোল্ডেন ওয়েজ) এবং পশ্চিম-উত্তরে পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও ইরান (গোল্ডেন ক্রিসেন্ট) হল পপি উৎপাদনকারী দেশ। ফলে ঐসব দেশের মাঝখানে অবস্থিত বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক মাদকদ্রব্য চোরাচালানের করিডোর বানানো হয়েছে। তাই ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশে মাদক দ্রব্যের সহজলভ্যতা লক্ষ করা যাচ্ছে।
২. অপরিণামদর্শিতা: কিশোরদের অনেকেই অপরিণামদর্শিতার কারণে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। এরা মাদকদ্রব্য গ্রহণের কুফল সম্পর্কে তেমন অবগত নয়। এরা মনে করে ইচ্ছে করলেই সে দু/একবার স্বাদ গ্রহণ করে বাদ দিতে পারবে। কিন্তু সে তার অজান্তেই এক সময় মাদক দ্রব্যের ওপর হয়ে পড়ে নির্ভরশীল।
৩. মূল্যবোধের অবক্ষয়: বাংলাদেশের সমাজে ইদানীং নানা কারণে মূল্যবোধের দারুণ অবক্ষয় ঘটেছে। আদর্শ ও মূল্যবোধহীন জীবন, অর্থ-বিশৃঙ্খল জীবন ও বলগাহীন জীবনে অভ্যস্তরা মাদকদ্রব্য গ্রহণসহ যেকোনো অপরাধমূলক কাজকর্মে অংশ নিতে এতটুকু কুণ্ঠাবোধ করে না।
মাদকাসক্তির হাত থেকে রক্ষার জন্য সুপারিশসমূহ
মাদকাসক্তির জন্য যেসব সমাজিক, মনস্তাত্ত্বিক, প্রশাসনিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ভৌগোলিক কারণকে দায়ী করা হয়েছে সেগুলো দূর করতে পারলে মাদকাসক্তি সমস্যার সমাধান হতে পারে। যেমন :
১. এমন সুষ্ঠু পারিবারিক পরিবেশ বজায় রাখা উচিত যাতে পরিবারের কোনো সদস্য পরিবারের আদর্শচ্যুত হয়ে মাদকাসক্তিতে জড়িয়ে পড়তে সুযোগ না পায়।
২. সন্তান-সন্ততি যেন কোনো রকমের অসৎ সঙ্গে না মিশে বা বদ অভ্যাসগুলো অনুসরণ না করতে শেখে সেদিকে লক্ষ্য রাখা পরিবারের অন্যতম দায়িত্ব।
৩. মাদকদ্রব্যের অপব্যবহারকারীদের দমনার্থে প্রণীত আইন কার্যকর করা প্রয়োজন।
৪. মাদকাসক্তি রোধে বেকারত্ব ও দারিদ্র্যের অবসানসহ শ্রেণি বৈষম্য কমিয়ে আনা আশু প্রয়োজন।
৫. মাদকদ্রব্য যাতে আমাদের সমাজে সহজলভ্য হতে না পারে সে জন্য প্রশাসনকে বিশেষভাবে সতর্কতা ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৬. সমস্যাটি যাতে আরো জটিল ও ব্যাপক না হতে পারে সে ধরনের উদ্যোগের পাশাপাশি বর্তমান মাদকাসক্তদের নিরাময় ও পুনর্বাসনের কাজ অত্যাবশ্যক। কেননা, মাদকসক্তদের অনেকেই নানা ধরনের অবৈধ কাজকর্মে অংশ নিচ্ছে। তদুপরি, এরা সংশ্লিষ্ট পরিবারের সুখশান্তি বিনষ্ট করছে।
৭. মাদকাসক্তির ভয়াবহতা সম্পর্কে পত্র পত্রিকা রেডিও টেলিভিশন ও সিনেমা সহ নানা প্রচারমাধ্যমে তুলে ধরতে হবে। এবং এর ভয়াবহতা সম্পর্কে পাঠ্যপুস্তকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।
উপসংহার
পরিশেষে বলা যায়, তরুণ সমাজের মধ্যে মাদকদ্রব্যের প্রতি ক্রমবর্ধমান আসক্তি এ দেশের ভবিষ্যৎ সমৃদ্ধি ও সুখ নস্যাৎ করতে উদ্যত। দেশের জাগ্রত তরুণসমাজই এ আসক্তির বিরুদ্ধে এক বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে। ফলে তরুণ সমাজ দেশে স্বাভাবিক সমৃদ্ধির পথকে সুন্দর করতে এগিয়ে আসবে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। তাই আমাদের সবারই মাদকমুক্ত বিশ্ব গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে আসা উচিত।
No comments