162. রাখি যাহা তাহা বোঝা, কাঁধে চেপে রহে দিই যাহা তার ভার বরাবর বহে।

আদিম যুগের মানুষ শুধু নির্ভরশীল ছিল খাদ্য সংগ্রহ আর ভোগ করার উপর। সঞ্চয় না থাকাতে তাদের পোহাতে হত নিদারুন কষ্ট। মানুষ যখনই সঞ্চয় করতে শিখেছে সভ্যতার যাত্রা শুরু তখনই। খাদ্য এবং সম্পদের সংরক্ষণ মানুষকে আধুনিক সভ্যতার পথ দেখিয়েছে। সঞ্চয়ের উপর ভিত্তি করে মানুষ গড়ে তুলেছে সুরম্য প্রাসাদ, অতিকায় অট্টালিকা। সমাজের দিকে তাকালেই আমরা দেখতে পাই মানুষের মাঝে বৈষম্য।
কেউ মনোরম প্রাসাদে বিলাসী জীবন যাপন করছে, আর কেউ পথের পাশে পড়ে আছে অনাহারে। মানুষ যখনই সঞ্চয়ের গুরুত্ব বুঝতে পেরেছে বৈষম্যের সূচনা হয়েছে তখনই। সঞ্চয়ের মানসিকতা মানুষকে ভোগবাদী হতে শিখিয়েছে। আর ভোগবাদী মানসিকতাই সমাজে বৈষম্যের সূত্রপাত করে। স্রষ্টার সৃষ্টি হিসেবে আমরা শ্রেষ্ঠত্ব পেয়েছি। কিন্তু এর নির্দশন আমরা রাখতে সক্ষম হইনি। মানবতাবোধ না থাকলে মানুষ যেমন পরম আত্মার সন্ধান পায় না। তেমনি অন্যের উপকার না করলে জীবাত্মা সন্তুষ্ট হয় না। আমরা যা কিছু সঞ্চয় করি তা সম্পূর্ণ নিজের জন্য। কিন্তু সঞ্চয়ের অংশ বিশেষ যদি আমরা সমাজ, রাষ্ট্রের কাজে ব্যয় করি, তবে তার ফল পুরো বিশ্ব ভোগ করে। সম্পদ একা ভোগ করে যেমন আনন্দ নেই তেমনি তাতে অন্যের উপকারও হয় না। মানব কল্যাণে, মানবতার উপকারে ব্যয় করা সম্পদ সমগ্র মানবজাতির কল্যাণে আসে। প্রকৃত মহৎ মানুষ তার সম্পদ মানব কল্যাণেই ব্যয় করে। এর ফলে মানজবজাতি যেমন উপকৃত হয় তেমনি স্রষ্টার সন্তুষ্টিও অর্জিত হয়
শিক্ষা: সম্পদ বা সঞ্চিত ধন যদি কেউ অন্যের উপকারে ব্যয় করে, তখন তার সুফল দ্বারা সমগ্র দেশ, জাতি সর্বোপরি সারাবিশ্ব উপকৃত হয়। মানুষের এই জনকল্যাণকর কাজ প্রকৃতিকে করে তোলে সমৃদ্ধ। মানবতা হয়ে উঠে সুশোভিত

No comments

Powered by Blogger.