112. বন থেকে জানোয়ার তুলে আনা যায় কিন্তু জানোয়ারের মন থেকে বন তুলে ফেলা যায় না।

মানুষ বন্য জানোয়ারের মাঝে মূল পার্থক্য হলো স্বভাব প্রকৃতিগত। অবস্থানের পরিবেশ এখানে মুখ্য নয়। অবস্থানগত দিক থেকে বন্য প্রাণীর আবাসস্থল হচ্ছে বন-জঙ্গল। অন্যদিকে মানুষ বাস করে লোকালয়ে। স্রষ্টা যেমন মানুষ জানোয়ারের মাঝে পরিবেশগত ভিন্নতা দিয়েছেন, তেমনি তাদের মনোজগতে দিয়েছেন স্বভাব প্রকৃতিগত ভিন্নতা। বন্য প্রাণী কিংবা মানুষ- উভয়কেই নিজ পরিবেশ থেকে
তুলে এনে অন্য পরিবেশ ভুক্ত করা যায়। কিন্তু তাতে শুধু দৈহিকভাবে অবস্থানের পরিবর্তন ঘটে। আচরণের কোনো পরিবর্তন ঘটে না। হিংস্র বন্য জন্তুকে লোকালয়ে এনে সভ্য করার চেষ্টা করা হলেও তার জান্তব আচরণ দূর করা সম্ভব নয়। কেননা সে প্রাকৃতিকভাবেই হিংস্র বন্য। তার দেহ লোকালয়ে অবস্থান করলেও মনোজাগতিকভাবে সে বনে বাস করে। মানুষ সুষ্টির শ্রেষ্ঠ হলেও কিছু মানুষ আছে যারা প্রকৃতগতভাবে অসৎ। এইসব মানুষদের পরিবেশের পরিবর্তন ঘটিয়ে সুন্দর আলোকিত পরিবেশে অন্তর্ভুক্ত করা যায়। সৎ ভালো মানুষের সাহচর্যে রেখে সৎ মানুষে পরিণত চেষ্টা করাও অসম্ভব নয়। কিন্তু তাদের সহজাত প্রবৃত্তির কোনও ইতিবাচক উন্নয়ন ঘটে না। কেননা মনোজগতে প্রকৃতিগত কোনোও পরিবর্তন হয় না। যারা স্বভাবগতভাবে অসৎ নয়, বরং সঙ্গদোষে কিংবা কুপ্রবৃত্তির তাড়নায় অসৎ হয় তারা সুস্থ্য-সুন্দর পরিবেশের প্রভাবে সৎ মানুষে পরিণত হতে পারে।  
শিক্ষা: মানুষ কিংবা অন্যান্য প্রাণীর মনোজাগতিক প্রকৃতি, স্বভাব, স্বধর্ম অপরিবর্তনশীল। জীবনের নিরাপত্তার জন্য মানুষ হিংস্র-বন্য প্রাণী থেকে নিজেদের নিরাপদ দূরত্বে রাখে। তেমনি সুস্থ্য-সুন্দর জীবনের জন্য অসৎ মানুষদের ব্যাপারে সব সময় সচেতন থাকা জরুরী

No comments

Powered by Blogger.