১. তৎসম বা সংস্কৃত উপসর্গ কাকে বলে? উদাহরণ সহ লিখ

সংস্কৃত ভাষার যে সব শব্দ তৎসম শব্দের মতো অবিকৃত অবস্থায় হুবুহু বাংলা ভাষায় গৃহীত হয়েছে, সেগুলোকে বলা হয় তৎসম বা সংস্কৃত উপসর্গ
পাণিনী ব্যাকরণ মতে-উপসর্গ ক্রিয়াযোগে (৫৯)
কারিকা : প্রপরাপসমন্ববনির্দুরভিব্যধিসূদতিনিপ্রতিপর্যপয়ঃ।
উপ আঙতি বিংশতিরেষ সখে উপসর্গবিধিঃ কথিতঃ কবিনা
[প্র, পরা, অপ, সম, অনু, অব্, নির্ দুর্, অভি, বি, অধি, সু, উদ, অতি, নি, প্রতি, পরি, অপি, উপ, আঙ্-
এই বিশ প্রকার উপসর্গবিধি]
পাণিনী এবং পরবর্তী ভাষ্যকারদের মতানুসারে সংস্কৃত উপসর্গের সংখ্যা ২০টি। এগুলো হলো-প্র, পরা, অপ, সম, অনু, অব্, নির্ দুর্, অভি, বি, অধি, সু, উদ, অতি, নি, প্রতি, পরি, অপি, উপ, আঙ্। এর ভিতরে আঙ্ উপসর্গ, ব্যবহারিক ক্ষেত্রে হিসাবে উল্লেখ করা হয়। যেমন-
-√দিশ্ (নির্দেশ করা) + (ঘঞ্)=আদেশ
দুস্ এবং নিস নামে কোন প্রত্যয় তালিকায় পাওয়া যায় না। ভাষ্যকরাদের মতে, এই দুটি উপসর্গ যথাক্রমে দুঃ নিঃ উপসর্গের ভাগ এবং এই ভাগ দুটির প্রতিনিধি হিসাবে দুর নির তালিকায় আনা হয়েছে। এই সূত্রে আমরা যে চারটি উপসর্গ পাই তা হলো-
দুঃ (দুর) দুস্-√বুধ্ (জানা) +=দুর্বোধ
দুঃ (দুস) দুস্-√খন্ (খনন করা) + ()=দুঃখ
নিঃ (নির্) নির্ -√জি (জয়লাভ করা) + (ক্ত)=নির্জিত
নিঃ (নিস্) নিস্-√কৃষ (আকর্ষণ করা) + (ঘঞ্)=নিষ্কর্শ
ধাতুপূর্ব উপসর্গ সংযোগ বিধি :
এক বা একাধিক উপসর্গ ধাতুর পূর্বে ব্যবহৃত হতে পারে। সে কারণে উপসর্গ ধাতুর সংলগ্ন হয়ে সব সময় বসে না। যেমন- দুর্--√চর +=দুরাচার। এখানে -উপসর্গচর ধাতুর আগে বসেছে, কিন্তু দুর্-উপসর্গ বসেছে -উপসর্গের পূর্বে
 শব্দ গঠন বানানরীতিতে উপসর্গের প্রভাব:
শব্দগঠনে উপসর্গ প্রত্যয় যুগপদ কাজ করে। এর ভিতরে প্রত্যয়ের প্রভাব প্রধান। প্রত্যয় ছাড়া ধাতু থেকে শব্দ গঠিত হয় না, কিন্তু উপসর্গ ছাড়া শব্দ গঠিত হতে পারে। সেকারণে শুধু উপসর্গ-যুক্ত ধাতু শব্দ তালিকায় আসে না। দুস্-√বুধ্ (জানা) দিয়ে কিছুই বুঝা যা না। কিন্তু দুস্-√বুধ্ (জানা) +=দুর্বোধ হলে শব্দ হিসাবে বিবেচিত হবে
গঠিত শব্দ প্রকাশিত হয়- বানানরীতির নিয়মে। উচ্চারণের পরিবর্তন ঘটে, ণত্ব-বিধান ষত্ব-বিধানের নিয়মে এক্ষেত্রে ব্যাখ্যা করাটা যুক্তযুক্ত নয়। কারণ, এই বিধান দুটি দ্বারা বাংলায় ব্যবহৃত তৎসম শব্দের বানান-প্রকৃতি বর্ণনা করা যায়, কিন্তু উচ্চারণের বিধি প্রতিষ্ঠিত করা যায় না। এই বিষয়ে ধ্বনিতত্ত্বে বাংলা বানানরীতি পাঠের ণত্ব-বিধান ষত্ব-বিধান আলোচনা করা হয়েছে
অর্থগত মান নির্ধারণে উপসর্গের প্রভাব :
উপসর্গ ধাতুর অর্থকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। এই বিষয়টি নির্ভর করে, উপসর্গ ধাতুর অর্থের বিচারে। ধাতুর যেমন একটি ভাবগত অর্থ আছে। এই অর্থকে যেমন প্রাধান্য দিতে হয়, তেমনি কোন উপসর্গ কোন অর্থে ব্যবহৃত হচ্ছে তাও বিবেচনায় আনতে হয়। এক্ষেত্রে উপসর্গ ধাতুর মানের পারস্পরিক ক্রিয়ায়, গঠিত শব্দের অর্থগত মান প্রকাশিত হয়। অর্থমান নির্ধারণে এই বিষয়টি দুটি ধারায় কাজ করে থাকে। যেমন
. সমর্থক : ধাতুর অর্থকে যথাযথ মানে প্রকাশ করে বা গভীরভাবে অর্থকে উদ্ভাসিত করে। যেমন- প্রমাণ। প্রকৃষ্ট অর্থে প্র উপসর্গমান ধাতুকে প্রকাশ করে। তাই প্রমাণের সমার্থ হয়ে দাঁড়ায়- প্রকৃষ্ট রূপে প্রকাশিত মান। এখানে উভয় মিলে যে অর্থ প্রকাশ করে তা উপসর্গের অর্থ ধাতুর অর্থকে বিকশিত করে বটে কিন্তু তা ঘটে ধাতুর মানকে সমর্থন করেই
.  বিবর্তক : উপসর্গ তার প্রভাব দ্বারা ধাতুর নিজস্ব অর্থ থেকে দূরে সরিয়ে দেয় ফলে ধাতুর অর্থগত বিবর্তন ঘটে সংস্কৃত ব্যাকরণে উপসর্গের এই প্রভাবকে বলপূর্বক (উপসর্গেণ ধাত্বর্থো বলাদন্যত্র নীয়তে) বলা হয়েছে এই সূত্রে উদাহরণ হিসাবে উল্লেখ আছে- প্রহার, আহার, সংহার, বিহার, পরিহার লক্ষ্যণীয় বিষয় যে, √হৃ ধাতুর ভাবগত অর্থ হল- হরণ করা কিন্তু উল্লেখিত শব্দে প্র, , সং, বি, পরি উপসর্গগুলো বলপূর্বক ধাতুর অর্থকে ভিন্নতর করে তুলেছে
পাণিনীর সূত্রানুসারে উপসর্গগুলো -প্রপরাপসমন্ববনির্দুরভিব্যধিসূদতিনিপ্রতিপর্যপয়ঃ। উপ আঙতি। বাংলা বর্ণানুক্রমে এর ক্রমবিন্যাসে যে রূপটি পাওয়া যায়, তা হলো
অতি, অধি, অনু, অব্, অপ, অপি, অভি, (আঙ্), উত, উপ, দুঃ (দুর্, দুস্), নি, নিঃ ( নির্, নিস), পরা, পরি, প্র, প্রতি, বি, সম, সু
অতি
অভিধান মতে- Öঅৎ (নিয়ত গমন করা) + =অতি। এই উপসর্গ মূলত অতিরিক্ত, অধিক অর্থে ব্যবহৃত হয়। এই মূলভাবের কিছু বিশেষ অর্থে প্রধান, অতিক্রান্ত, অতিরঞ্জিত, বাহুল্য, আদ্যাবস্থা ইত্যাদি অনুসারে এর অর্থে বিভাজিত করা হয়। যেমন-
অতিশয়িত বা অধিক অর্থে :
অতিকর্কশ, অতিকঠোর, অতিকাতর, অতিকায়, অতিকৃচ্ছ্র, অতিকেশ, অতিক্রূর, অতিক্ষীণ, অতিখর, অতিগণ্ড, অতিগন্ধ, অতিগভীর, অতিগহীন, অতিগুণ, অতিগুরু, অতিডীন, অতিতার, অতিতৃপ্ত, অতিতৃষ্ণ, অতিদরিদ্র, অতিদর্প, অতিদূর, অতিদান, অতিদারুণ, অতিদাহ, অতিদীন, অতিদুর্গত, অতিদীর্ঘ,অতিদোহ, অতিনিদ্রা, অতিনীচ, অতিপরিচিত, অতিপানেচ্ছু, অতিপিপাসিত, অতিপৌঢ়, অতিবড়, অতিবল, অতিবষ, অতিবাড়, অতিবাত, অতিবিমোহন, অতিবৃদ্ধ, অতিবৃষ্টি, অতিভীষণ, অতিরূঢ়, অতিলম্বা, অতিশয়, অতিহীন, অত্যুৎকৃষ্ট
প্রধান অর্থে : অতিদেব
অতিশায়নে : অতিতম, অতিতর,
বাহুল্য অর্থে : অতিরিক্ত, অতিকৃত, অতিবিধ,
অতিরঞ্জিত অর্থে : অতিকথা, অতিবিশদ, অতিপ্রকাশ, অতিপ্রণয়, অতিবিস্তর
অতিক্রান্ত অর্থে : আতিকশ, অতিক্রম, অতিক্রমণ, অতিক্রমণীয়, অতিক্রমী,অতিক্রান্ত, অতিগ, অতিচার, অতিজর, অতিজব, অতিজাত, অতিদেশ, অতিপত্তি, অতিপর, অতিপাত, অতিপাতক, অতিপাতিত, অতিপাতী, অতিপাত্য, অতিপ্রকৃতি, অতিপ্রাকৃত, অতিবষ, অতিবর্তন, অতিবাদ, অতবাহ, অতিবুদ্ধি,
আদ্যা-নির্দেশনায় : অতিকল্য, অতিসকাল
 ব্যঞ্জনবর্ণের সাথে এই উপসর্গে কোন সন্ধি হয় না। কিন্তু স্বরসন্ধিতে এর বানান পরিবর্তন ঘটে। যেমন-
·         অতি +=অতী অতি ++=অতীত
·         অতি +=অত্য অতি ++=অত্যয়
·         অতি + =অত্যু অতি-উৎকৃষ্ট=অত্যুৎকৃষ্ট
এর পরে যুক্ত অপরাপর যে উপসর্গ যুক্ত হতে পারে-
·         : অতি-চর +=অত্যাচার
·         উৎ (উদ) উপসর্গজাত শব্দ : অতিউৎকৃষ +=অত্যুৎকৃষ্ট
অধি (সংস্কৃত ক্রমসংখ্যা ১১)
এই উপসর্গ অধিকারপ্রাপ্ত, অধিক, উপরস্থিত, অধিষ্ঠীত অর্থে ব্যবহৃত হয়
·         অধিকারপ্রাপ্ত, অধীনস্থ অর্থে : অধিকৃত, অধিগত, অধিবাস, অধীত
·         অধিক অর্থে : অধিগুণ, অধিজিহ্বা, অধিমাস, অধিশ্রী
·         উপরস্থিত, আরূঢ় অর্থে : অধিত্যকা, অধিদন্ত, অধিনাথ, অধিপ, অধিরোহণ
·         অধিষ্ঠীত অর্থে : অধিদেব, অধিদেবতা, অধিভূত, অধিশ্রয়
ব্যঞ্জনবর্ণের সাথে এই উপসর্গে কোন সন্ধি হয় না। কিন্তু স্বরসন্ধিতে এর বানান পরিবর্তন ঘটে। যেমন-
·         অধি+=অধ্য অধিঅস্+=অধ্যাস
·         অধি +=অধী অধি+মান=অধীয়মান
·         অধি +=অধী অধিঈশ+=অধীশ
এর পরে যুক্ত অপরাপর যে উপসর্গ যুক্ত হতে পারে-
·         অব অধি-অবসো +অন=অধ্যাসান
·         অধি-ক্রম +=অধ্যাক্রম
অনু, অব্, অপ, অপি, অভি, (আঙ্), উদ, উপ, দুঃ (দুর্, দুস্), নি, নিঃ ( নির্, নিস্), পরা, পরি, প্র, প্রতি, বি, সম, সু,
তৎসম উপসর্গ শুধুমাত্র তৎসম শব্দের আগে বসে। তৎসম উপসর্গ মোট ২০টি-
প্র
পরা
অপ
সম
নি
অনু
অব
নির
দুর
বি
অধি
সু
উৎ
পরি
প্রতি
অতি
অপি
অভি
উপ

নিচে সংস্কৃত উপসর্গগুলোর প্রয়োগ দেখানো হলো-
উপগর্স
অর্থ
উদাহরণ/ প্রয়োগ
প্র
প্রকৃষ্ট/ সম্যক
প্রচলন (প্রকৃষ্ট রূপ চলন/ চলিত যা)প্রভাব, , প্রস্ফুটিত
খ্যাতি
প্রসিদ্ধ, প্রতাপ
আধিক্য
প্রবল (বলের আধিক্য), প্রগাঢ়, প্রচার, প্রসার
গতি
প্রবেশ, প্রস্থান
ধারা-পরম্পরা
প্রপৌত্র, প্রশাখা, প্রশিষ্য
পরা
আতিশয্য
পরাকাষ্ঠা, পরাক্রান্ত, পরায়ণ
বিপরীত
পরাজয়, পরাভব
অপ
বিপরীত
অপমান, অপকার, অপচয়, অপবাদ
নিকৃষ্ট
অপসংস্কৃতি (নিকৃষ্ট সংস্কৃতি), অপকর্ম, অপসৃষ্টি, অপযশ
স্তানান্তর
অপসারণ, অপহরণ, অপনোদন
বিকৃত
অপমৃত্যু
সুন্দর
অপরূপ
সম
সম্যক রূপে
সম্পূর্ণ, সমৃদ্ধ, সমাদর
সম্মুখে
সমাগত, সম্মুখ
নি
নিষেধ
নিবৃত্তি, নিবারণ
নিশ্চয়
নির্ণয়
আতিশয্য
নিদাঘ, নিদারুণ
অভাব
নিষ্কলুষ (কলুষতাহীন), নিষ্কাম
অনু
পশ্চাৎ
অনুশোচনা (পূর্বের কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা), অনুগামী (পশ্চাদ্ধাবনকারী), অনুজ, অনুচর, অনুতাপ, অনুকরণ
সাদৃশ্য
অনুবাদ, অনুরূপ, অনুকার
পৌনঃপুন্য
অনুশীলন (বারবার করা) , অনুক্ষণ, অনুদিন
সঙ্গে
অনুকূল, অনুকম্পা
অব
হীনতা
অবজ্ঞা, অবমাননা
সম্যক ভাবে
অবরোধ, অবগাহন, অবগত
নিমেণ/ অধোমুখিতা
অবতরণ, অবরোহণ
অল্পতা
অবশেষ, অবসান, অবেলা
নির
অভাব
নিরক্ষর, নির্জীব, নিরহঙ্কার, নিরাশ্রয়, নির্ঘন
নিশ্চয়
নির্ধারণ, নির্ণয়, নির্ভর
বাহির/ বহির্মুখিতা
নির্গত,নিঃসরণ, নির্বাসন
দুর
মন্দ
দুর্ভাগা, দর্দশা, দুর্নাম
কষ্টসাধ্য
দুর্লভ, দুর্গম, দুরতিক্রম্য
১০
অধি
আধিপত্য
অধিকার, অধিপতি, অধিবাসী
উপরি
অধিরোহণ, অধিষ্ঠান
ব্যাপ্তি
অধিকার,অধিবাস, অধিগত
১১
বি
বিশেষ রূপে
বিধৃত, বিশুদ্ধ, বিজ্ঞান, বিবস্ত্র, বিশুষ্কবিনির্মাণ
অভাব
বিনিদ্র, বিবর্ণ, বিশৃঙ্খল, বিফল
গতি
বিচরণ, বিক্ষেপ
অপ্রকৃতিস্থ
বিকার, বিপর্যয়
১২
সু
উত্তম
সুকণ্ঠ, সুকৃতি, সুচরিত্র, সুপ্রিয়, সুনীল
সহজ
সুগম, সুসাধ্য, সুলভ
আতিশয্য
সুচতুর, সকঠিন, সুধীর, সুনিপুণ, সুতীক্ষ্ণ
১৩
উৎ
ঊর্ধ্বমুখিতা
উদ্যম, উন্নতি, উৎক্ষিপ্ত, উদগ্রীব, উত্তোলন
আতিশয্য
উচ্ছেদ, উত্তপ্ত, উৎফুলল, উৎসুক, উৎপীড়ন
প্রস্ত্ততি
উৎপাদন, উচ্চারণ
অপকর্ষ
উৎকোচ, উচ্ছৃঙ্খল, উৎকট
১৪
পরি
বিশেষ রূপ
পরিপক্ব, পরিপূর্ণ, পরিবর্তন
শেষ
পরিশেষ
সম্যক রূপে
পরিশ্রান্ত, পরীক্ষা, পরিমাণ
চতুর্দিক
পরিক্রমণ, পরিমন্ডল
১৫
প্রতি
সদৃশ
প্রতিমূর্তি, প্রতিধ্বনি
বিরোধ
প্রতিবাদ, প্রতিদ্বন্দ্বী
পৌনঃপুন্য
প্রতিদিন, প্রতি মাস
অনুরূপ কাজ
প্রতিঘাত, প্রতিদান, প্রত্যুপকার
১৬
অতি
আতিশয্য
অতিকায়, অত্যাচার, অতিশয়
অতিক্রম
অতিমানব, অতিপ্রাকৃত
১৭
অপি
অপিচ
১৮
অভি
সম্যক
অভিব্যক্তি, অভিজ্ঞ, অভিভূত
গমন
অভিযান, অভিসার
সম্মুখ বা দিক
অভিমুখ, অভিবাদন
১৯
উপ
সামীপ্য
উপকূল, উপকণ্ঠ
সদৃশ
উপদ্বীপ, উপবন
ক্ষুদ্র
উপগ্রহ, উপসাগর, উপনেতা
বিশেষ
উপনয়ন (পৈতা), উপভোগ
২০
পর্যন্ত
আকণ্ঠ, আমরণ, আসমুদ্র
ঈষৎ
আরক্ত, আভাস
বিপরীত
আদান, আগমন
ধাতুর সাথে বিভিন্ন উপসর্গযোগে একই ধাতুর নানা প্রকার অর্থ প্রকাশ করে। কখনও কখনও অর্থেরও পরিবর্তন ঘটে, বার কখনও ধাতুর মূল অর্থই বিশেষভাবে প্রকাশ পায়। যেমন-
·         কৃ ধাতু : +কার=কার   মূর্তি
·          প্র+কার=প্রকার    রকম
·         অপ+কার=অপকার    ক্ষতি
·         বি+কার=বিকার    স্বাভাবিক অবস্থার বিপরীত
·         গম ধাতু :+গমন=গমন    সা
·         নিঃ+গমন=নির্গমন    বাহির হওয়া
·         বিহঃ+গমন=বহির্গমন    বাহিরে যাওয়া
·         প্রতি+গমন=প্রত্যগমন ফিরিয়া সা
·         হৃ ধাতু :+হার=হার    খাদ্য
·         বি +হার=বিহার    নন্দে বিচরণ
·         প্র +হার=প্রহার    মারপিট
·         অনা +হার=অনাহার    উপবাস
·         উপ +হার=উপহার    উপঢৌকন
বিশেষ দ্রষ্টব্য : , সু, বি, নি- এই চারটি উপসর্গ তৎসম বাংলা উভয় উপসর্গ হিসেবেই ব্যবহৃত হয়। রূপের বদল না হলেও এই চারটি উপসর্গকে বাংলা উপসর্গ বলার কারণ, তৎসম শব্দের সঙ্গে ব্যবহৃত হলে সেই উপসর্গকে তৎসম উপসর্গ আর তদ্ভব বা খাঁটি বাংলা শব্দের সঙ্গে ব্যবহৃত হলে সেই উপসর্গকে বাংলা উপসর্গ বলা হয়। তাই এই উপসর্গগুলো যখন তদ্ভব শব্দের সঙ্গে ব্যবহৃত হয়, তখন এগুলোকে বলা হয় বাংলা উপসর্গ। আর যখন তৎসম শব্দের সঙ্গে ব্যবহৃত হয়, তখন বলা হয় তৎসম বা সংস্কৃত উপসর্গ। যেমন, ‘আলুনিতে বাংলা উপসর্গ, আরআকণ্ঠতে সংষ্কৃত বা তৎসম উপসর্গ

No comments

Powered by Blogger.