24. একুশে ফেব্রুয়ারি বা ভাষা আন্দোলন
ভূমিকা:
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে বাংলা ভাষার অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে যে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম হয়েছিল তাই একুশে ফেব্রুয়ারি। ২১ ফেব্রুয়ারির ভাষা আন্দোলন হলো স্বাধীনতা সংগ্রাম ও স্বাধীনতা অর্জনের চেতনা ও প্রেরণাস্বরুপ। ভাষা শহিদের রক্তেভেজা দিনটিই‘শহিদদিবস’ নামে পরিচিত।
একুশের পটভূমি:
ইংরেজদের সাথে যুদ্ধ করে ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান স্বাধীন হয়। এরপর
বাংলাদেশকে পূর্বপাকিস্তান নাম দিয়ে শাসনভার নেয় পাকিস্তান। পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা ও
প্রথম সরকার জেনারেল কায়েদে আজম মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ ১৯৪৮ সালের ২৪ মার্চ ঢাকার কার্জন হলে বিশাল জনসভায় বলেন, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। আবার ১৯৫২ সালের ৩০ জানুয়ারি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দিন ঘোষণা দেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু।
এতে ছাত্রসমাজ তীব্র প্রতিবাদ জানায়। মাতৃভাষা রক্ষার জন্য সারাদেশে সর্বস্তরের মানুষ আন্দোলন শুুরু করে। ২১ ফেব্রুয়ারিতে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। দামাল ছেলেরা মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার দাবিতে ১৪৪ ধারা ভেঙে মিছিল বের করে। পুলিশের গুলিবষর্ণে প্রাণ দেয়—সালাম, রফিক, জব্বার, বরকত, শফিকুর রহমানসহ আরও অনেকে।
প্রাণের বিনিময়ে বাংলা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পেলো। ভাষা সৈনিক যেস্থানে প্রাণ দিয়েছিল সেস্থানে গড়ে উঠল কেন্দ্রীয় শহিদমিনার। মিনারটি উদ্বোধন করলেন শফিকুর রহমানের বৃদ্ধ পিতা।
বাংলাদেশকে পূর্বপাকিস্তান নাম দিয়ে শাসনভার নেয় পাকিস্তান। পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা ও
প্রথম সরকার জেনারেল কায়েদে আজম মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ ১৯৪৮ সালের ২৪ মার্চ ঢাকার কার্জন হলে বিশাল জনসভায় বলেন, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। আবার ১৯৫২ সালের ৩০ জানুয়ারি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দিন ঘোষণা দেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু।
এতে ছাত্রসমাজ তীব্র প্রতিবাদ জানায়। মাতৃভাষা রক্ষার জন্য সারাদেশে সর্বস্তরের মানুষ আন্দোলন শুুরু করে। ২১ ফেব্রুয়ারিতে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। দামাল ছেলেরা মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার দাবিতে ১৪৪ ধারা ভেঙে মিছিল বের করে। পুলিশের গুলিবষর্ণে প্রাণ দেয়—সালাম, রফিক, জব্বার, বরকত, শফিকুর রহমানসহ আরও অনেকে।
প্রাণের বিনিময়ে বাংলা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পেলো। ভাষা সৈনিক যেস্থানে প্রাণ দিয়েছিল সেস্থানে গড়ে উঠল কেন্দ্রীয় শহিদমিনার। মিনারটি উদ্বোধন করলেন শফিকুর রহমানের বৃদ্ধ পিতা।
আন্দোলন:
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সব জেলায়, মহকুমায়, গ্রামেগঞ্জে আন্দোলন শুরু হয়। জনগণ মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার দাবি জানায় সভাসমিতি, মিছিল ও শ্লোগানের মাধ্যমে। এক পর্যায়ে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ পরিণত হয়, এতে প্রাণ দেন কিছু বাঙালি বীর।
ঘটনা প্রবাহ:
আন্দোলন দমনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মূখ্যমন্ত্রী নূরুল আমীনের আদেশে এদেশের ছাত্র, জনতার উপর বল প্রয়োগ করা হয়। ১৪৪ ধারা জারি,লাঠি চার্জ, কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ, গুলিবর্ষণ ইত্যাদি চলতে থাকে। তারপর ১৯৫২ সালের ৩০ জানুয়ারি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দীনের কথায় ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়। ফলে আন্দোলন বানচাল করার জন্য তৎকালীন শাসক গোষ্ঠী ২০ ফেব্রুয়ারির বিকেলে ১৪৪ ধারা জারি করে। কিন্তু ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে আমতলায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার সিদ্ধান্ত নেয় ছাত্র-জনতার এক বিরাট সমাবেশ।
একুশে ফেব্রুয়ারির ঘটনা:
দামাল ছেলেরা ২১ ফেব্রুয়ারিতে ১৪৪ ধারা ভেঙে মিছিল বের করে। বিক্ষোভ প্রদর্শনের জন্য তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে দিয়ে দলে দলে রাস্তায় এসে নামে। বিকাল ৩.৩০ মিনিটে অকস্মাৎ পুলিশ বাহিনি মিছিলে গুলি ছোঁড়ে। ফলে বর্তমান কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের কাছে প্রাণ দিল সালাম, রফিক, জব্বার, বরকতসহ অনেকেই। লাশ নিয়ে শোভাযাত্রা করলে পুলিশ গুলি চালালে শফিকসহ অনেকে শহিদ হন।
হত্যার প্রতিক্রিয়া:
মিছিলে গুলিবর্ষণ ও ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিক্ষোভ শুরু হয়। তরুণদের আন্দোলনকে কোনোভাবেই রোধ করতে না পেরে পাকিস্তানের শাসক দাবী মেনে নিতে বাধ্য হলো। বাংলাভাষা রাষ্ট্র ভাষার মর্যাদা পেল। ভাষা সৈনিকেরা যে স্থানে আত্মাহুতি দিয়েছিল সে স্থানে গড়ে উঠল কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার। মিনারটি উদ্বোধন করলেন শফিকুর রহমানের বৃদ্ধ পিতা।
উপসংহার:
স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে একুশে ফেব্রুয়ারি আপোষহীন সংগ্রাম ও জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। তাই দিনটি আমাদের কাছে একটি সংগ্রামী ঐতিহ্য এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে একটি বলিষ্ঠ চেতনা। ১৯৫২ সালে জয়ী মনোভাব আমাদের ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করতে উদ্বুদ্ধ করে।
No comments