20. আপনি আচরি ধর্ম শিখাও অপরে।

উপদেশ দেওয়ার মানুষের অভাব হয় না। আমাদের সমাজে এমন অনেক ব্যক্তি আছেন যারা উপদেশ দিতে খুবই পছন্দ করেন। কিন্তু তাদের নিজেদের জীবনে সে কাজের প্রতিফলন খুব একটা দেখা যায় না। এমন ব্যক্তিরা যখন কাউকে কোনো কিছু শিক্ষা দিতে চেষ্টা করেন, তখন সেটা খুব কমই গ্রহণযোগ্য হয়। ভালো কাজ করতে বলা খুবই সহজ, কিন্তু ভালো কাজ করে দেখানোটা খুবই কঠিন। মানবজাতির ধর্মই হলো অন্ধকার নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি আকর্ষণ। এইসব খারাপ কাজে মানুষ সহজাত প্রবৃত্তিগত কারণেই আকৃষ্ট
হয়। এসব থেকে দূরে থেকে জীবনে সুন্দর সত্যের বিকাশ ঘটানোই প্রতিটি মানুষের করণীয়। কিন্তু এসব মিথ্যা অন্ধকারের হাতছানিকে উপেক্ষা করে জীবনে সততার পথ অবলম্বন করা ভীষণ কঠিন। আর এই কঠিন কাজটি নিজেরা সম্পাদন করার পরই কেবল অন্যদেরকে শিক্ষা দেওয়া উচিত। তবেই সেই শিক্ষা অর্থবহ হয়ে উঠবে। একজন নীতিবান মানুষ তার সারাজীবনে ন্যায়, নীতি অনুশীলন করলেই কেবল অন্যরা তার নিকট থেকে উপদেশ গ্রহন করবে। মহানবী (.) এর নিকট একদা এক মা এসে তার ছেলেকে মিষ্টি খেতে নিষেধ করার জন্য অনুরোধ করেন। তিনি সেই মাকে এক সপ্তাহ পরে আসতে বলেন। সেই এক সপ্তাহে তিনি আগে মিষ্টি খাওয়া পরিহার করেন, তারপর সেই ছোট ছেলেটিকে মিষ্টি খেতে নিষেধ করেন। এই উদাহরণ আরো স্পষ্ট করে যে, নিজে না করে, অন্যকে কিছু করতে বলাটাই অন্যায়। শুধু ইসলাম ধর্মেই নয়, অন্যান্য সকল ধর্মেই একই কথা বলা হয়েছে। গুণীজনদের ইতিহাস পর্যালোচনা করলেও আমরা তাদের চরিত্রে এই গুণেরই চর্চা দেখতে পাই। সুতরাং উপদেশ দেয়ার আগে আমাদের অবশ্যই চিন্তা করতে হবে আমরা নিজেরা কাজটি করতে কতটুকু সক্ষম

শিক্ষা: যেকোনো কাজের ক্ষেত্রে উপদেশ প্রদানের পূর্বশর্ত হলো নিজে সেই কাজের যথার্থ অনুশীলন করা। নিজে সে কাজ করে দেখাতে না পারলে উপদেশ অর্থহীন হয়ে পড়ে। নিজে করে অপরকে শিক্ষা দিলেই, কেবলমাত্র সেই শিক্ষা গ্রহণযোগ্য হয়

No comments

Powered by Blogger.